বান্দরবান প্রতিনিধি

  ১৭ অক্টোবর, ২০২৪

চেয়ারম্যান নেই বান্দরবান জেলা পরিষদে 

ফাইল ছবি

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের ন্যস্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনুপস্থিতে অনেকটা অকার্যকর বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক-শিক্ষকা বা কর্মচারীকে বদলি করতে হলে পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুমোদন নিতে হয়।

গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা আত্নগোপনে চলে যায়। এতে করে পরিষদের উন্নয়ন কর্মকন্ড থেকে শুরু করে ন্যস্ত বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী বদলিসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ যায়।

তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বিল পরিশোধ করার জন্য পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে পার্বত্য মন্ত্রনালয় থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে ‘বদলি বা উন্নয়নমুলক কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি’ বিষয়টি নিশ্চিত করে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা।

জানা যায়, পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজ ক্ষমতায় চলতি বছর ৬ অক্টোবর এক আদেশে লামা ও আলীকদম উপজেলায় কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী আদেশ দেন। আলীকদম চস্পট পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহানারা পারভীন লাকীকে নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং নয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলন কান্তি চাকমাকে চস্পট পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।একই তারিখের আরেক আদেশে লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী মংয়েইনু মার্মাকে আলীকদম এবং আলীকদম উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী হিরো ম্রোকে লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসে বদলি করা হয়।

এছাড়াও লামা উপজেলায় আরো দুই শিক্ষক বদলির খবর পাওয়া গেছে। জাহানারা পারভীন লাকী ও মিলন কান্তি চাকমা জানান-সরকারী চাকুরী করতে হলে বদলি অবশ্য হতে হবে। তবে এই মুহুর্তে কিভাবে আমাদেরকে বদলি করা হয়েছে আমরা কিছুই জানিনা।

এদিকে ২০২১ সালের ৯ডিসেম্বর একটি আবেদনের আলোকে সহকারী শিক্ষক আবদুল দয়ানকে মেউলার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সহকারী শিক্ষক আজগর হোসেনকে লাইনঝিড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। তবে এই দুই শিক্ষক নিজের মধ্যে প্রায় ৩ বছর ধরে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে সমন্বয় করে কর্মরত ছিলেন। তবে তারা স্ব স্ব পদে যোগদান না করায় তাদের বিরুদ্ধে চলতি বছর ২৯ আগষ্ট বিভাগীয় মামলার জন্য একটি আবেদন পার্বত্য জেলা পরিষদে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়। মামলা নিস্পত্তি ছাড়াই ২০২১ সালের ৯ডিসেম্বর আদেশে তাদেরকে বদলি করা হয়।

জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক আজগর হোসেন বলেন, আমারা দুই শিক্ষক পারষ্পরিক সমন্বয় করে করে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলাম। তবে একটি আদেশে যোগদান না করায় দুইজনের নামে বিভাগীয় মামলার জন্য পার্বত্য জেলা পরিষদে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়। তবে মামলার আদেশ নিস্পত্তি হয়েছে কিনা আমি জানিনা। পুর্বের অফিস আদেশে লাইনঝিড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। সহকারী শিক্ষক আবদুল দয়ান এর কাছে একই বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি চলতি বছর ৬অক্টোবর মেউলার চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করি।

অপরদিকে বদলির বিষয় জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আবদুল মান্নান বলেন, জেলা পরিষদের চীফ এর সাথে আলোচনা করে তাদেরকে বদলি করা হয়েছে। তবে আমাদের জরুরী কিছু কিছু কাজ করতে হয়। পার্বত্য জেলা পরিষদ পূর্ণগঠন করা হলে পরিষদ থেকে অনুমোদন নেওয়া হবে। যদি অনুমোদন না দেয় তাহলে এই আদেশ অকার্যকর হবে। দুই শিক্ষকের বিভাগীয় মামলার নিস্পত্তি না করে বদলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফাইল না দেখে বলা যাচ্ছে না।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ বিল্লাহ বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ পার্বত্য জেলা পরিষদের ন্যস্ত। ন্যস্ত বিভাগের যেকোন কর্মকর্তা বা শিক্ষক এবং কর্মচারী বদলি করতে হলে পরিষদের অনুমোদন নিতে হবে। তবে চেয়ারম্যান না থাকায় কোন ধরণের বদলির অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছেনা। তবে কেউ যদি নিজের ক্ষতায় বদলি করে থাকেন তা গ্রহন যোগ্যতা পাবেনা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বান্দরবান,শিক্ষা অধিদপ্তর,জেলা পরিষদ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close