সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

  ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

নীলফামারীর সৈয়দপুর

রেলওয়ের জমি-কোয়ার্টার ও পানির পাম্প দখল 

সৈয়দপুরের মুন্সিপাড়ায় রেলওয়ের কোয়ার্টার ভেঙে পাকা বাড়ি নিমার্ণ -প্রতিদিনের সংবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের কোয়ার্টার ও ভবনসংলগ্ন জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণকাজ চলছে। রেলওয়ের জমি, কোয়ার্টার ও পনির পাম্প রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের কারণে এসব হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। জানা গেছে, প্রায় ১২০০ কোয়ার্টার রেল বিভাগ দখল হারিয়েছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন রেল কর্তৃপক্ষ এ শহরে রেলকে ঢেলে সাজাতে প্রায় ৮৫০ একর ভূসম্পত্তি নিজ অধীনে করে নেয়। ১৮৭০-১৯৭০ সাল পর্যন্ত রেলওয়ের এসব অর্জিত জমি সুরক্ষিত ছিল। এরপর থেকে শুরু হয় রেলওয়ের জমি দখল বিক্রয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মোতালেব হোসেন হক জানান, শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার কারণে প্রায় ১২০০ কোয়ার্টার বেদখলে চলে গেছে। রেল বিভাগ দখল হারিয়েছে কোটি কোটি টাকা সম্পত্তি।

শহরের মুন্সিপাড়ার ইসলামিয়া স্কুল সংলগ্ন স্থানীয় তন্ময় জানান, ওই এলাকার ফটিক নামের এক ব্যক্তি রেলওয়ের কোয়ার্টার ভেঙে ও পতিত জমিতে একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করছেন। আশপাশ এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার হয়নি। এছাড়া শহরের রেললাইনের দুইপাশ, ড্র্রেনসংলগ্ন এলাকা ও অফিসার্স কলোনি, রসুলপুর হাওয়াদ পাড়াও গার্ডপাড়া এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছে। একই সঙ্গে বানিজ্যিক বরাদ্দের কাগজ দেখিয়ে পানির পাম্প দখল করে সেখানে নির্মাণ হচ্ছে পাকা দোকানপাট।

এদিকে ফটিক বলেন, মুন্সিপাড়ার কেউই কোয়ার্টার ভেঙে ঘরবাড়ি বানাতে রেলওয়ের লাইসেন্স বা অনুমতি নেয়নি। সবাই যেভাবে ঘরবাড়ি বানাচ্ছেন, আমিও সেভাবেই নির্মাণ করছি।

শহরের মিস্ত্রি পাড়া মোড়ের বাবু জানান, সেখানকার পানির পাম্প সংলগ্ন কিছু জমি বরাদ্দের জন্য শহীদ সন্তান শেখ জামিল ও নিয়াজ আহমেদ বাবলু পাকশি রেলবিভাগে আবেদন করেন। কিন্তু সেখানে পানির পাম্প বরাদ্দ দেওয়া হয় না বলে জানানো হয়। এর পরপরই ঈদের পর ছুটি শেষে অফিস খোলার আগেই বাবলু নামের ওই যুবদল নেতা বানিজ্যিক বরাদ্দের কাগজ দেখিয়ে পানির পাম্পটি দখল নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করে দেন। শেখ জামিলকে বরাদ্দ না দেওয়ায় অভিযোগ দেওয়া হয় স্থানীয় উপসহকারী প্রকৌশলীর দপ্তরে। কিন্তু ওই দপ্তরের উপসহকারী আবাসিক প্রকৌশলী সরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল প্রদর্শন করার পরও কার্যকর পদক্ষেপই নেননি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সৈয়দপুর রেলের উপসহকারী প্রকৌশলী সরিফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিয়াজ আহমেদ প্রথমে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে রাজস্ব প্রদানের কাগজ দেখান। এটাকেই তিনি লাইসেন্স মনে করেন। পড়ে তার বরাদ্দের কাগজ চাইলে স্থাপনা নির্মাণের একটি বানিজ্যিক লাইসেন্স প্রদর্শন করেন। যেহেতু জায়গাটি রেলওেয়ের ও সেখানে পানির পাম্প বিদ্যমান, সেহেতু যদি লাইসেন্স দেওয়া হয়, তাহলে সেটি বাতিল করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ষ্টেট বিভাগ পাকশির বিভাগীয় প্রধানের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত লাইসেন্স বাতিল করে পাম্পটি রেলওয়ের নিজ দখলে নিতে পারবো না, ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষান্ত হবেন না বলে জানান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নীলফামারীর সৈয়দপুর,সৈয়দপুরে রেলওয়ে,জমি দখল
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close