বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভিটা মাটি দখল আতঙ্কে ৩০ হিন্দু পরিবার

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

পটুয়াখালীর বাউফলের ঘুরচাকাঠী গ্রামে ৩০টি হিন্দু পরিবারের জমি দখলের পায়তারা করছে হারুন কারী ও তার পরিবার। ফলে ওই পরিবারগুলো এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এমনই অভিযোগ তাদের।

সূত্রে জানা গেছে, ঘুরচাকাঠী গ্রামে দীর্ঘকাল ধরে অর্ধশত হিন্দু পরিবার বসবাস করে আসছেন। এসব হিন্দু পরিবারের জমিজমা, ভিটে মাটি দখলে নিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে হারুন কারী ও তার পরিবারের লোকজন। ২০২১ সালে নরেন রক্ষিতকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ৩ একর জমির অপ্রত্যাহারযোগ্য আমমোক্তারনামা দলিল নেয় হারুন কারী ও তার ভাই কাদের কারী। জমি বিক্রির বিশেষ ক্ষমতার জোরে নরেন রক্ষিতের ঘর বাড়ি দখল করে নেন হারুন ও তার লোকজন। এরপর তাদের হুমকিরমুখে এলাকা থেকে ভারতে পালিয়ে যান নরেন রক্ষিতৎ ও তার পরিবার।

এরপর থেকে ওই এলাকার হিন্দু পরিবার গুলোর জমি দখলের মিশনে নামে হারুন কারী। হিন্দুদের বসতবাড়ি ফসলি জমিজমা ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। কেউ স্বে”ছা এলাকা ত্যাগ করতে না চাইলে তাদেরকে অত্যাচার নির্যাতন করতো হারুনকারী। অত্যাচারের শিকার হয়েছেন অনেক মুসলিম পরিবারও।

শিউলী রাণী ওঝা নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, নদী ভাঙনে ভিটে মাটি সব হারিয়েছি। ২১ বছর আগে ঘুরচাকাঠী গ্রামে কিছু জমি কিনে ঘরবাড়ি করে বসবাস করে আসছি। গত বছর হারুন কারী আমাদের বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে আবারও বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছেন। টাকা না দিলে আমাদের জমিতে মসজিদ বানানোর হুমকি দিয় হারুন।

হারুন কারীর অত্যাচারে শিকার সুনিল রক্ষিৎ নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার পৈত্রিক সম্পত্তি যুগ যুগ ধরে ভোগদখল করে আসছি। ভূমি দস্যু হারুন কারী ভূয়া ওয়ারিশ নামা দিয়ে নরেন রক্ষিতের কাছ থেকে জোর করে ক্ষমতা নিয়ে আমাদের ঘর বাড়ি জমি জমা দখল নিতে চায়।

চয়ন কুমার লিটন রক্ষিত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হারুন কারী হিন্দুদের জমিজমা দখলে নেওয়ার পায়তারা করে আসছিলেন। একই ভাবে হিন্দু পাড়ার সুভাষ রাঢ়ী, করুন বৃত ঘরামী, আরতী রানী, বিমল হাওলাদার, খুকু রানী, কল্পনা রানী সহ প্রায় ৩০টি পরিবার হারুন কারীর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার।

এদিকে হারুন কারী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো হিন্দুদের সম্পত্তি জোর করে দখল করিনি। তাদেরকে ভিটামাটি থেকে উ”েছদের ভয়ভীতি দেখাইনি। কিছু সম্পত্তি আমি বৈধ ভাবে ক্রয় করেছি। আমার ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ওইখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না ঘটে সে বিষয়ে পুলিশের নজরদারি আছে। যেহেতু জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ পুলিশের নিষ্পত্তি করার সুযোগ নেই। এটি আদালত দেখবেন।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে বিষয়টির তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পটুয়াখালীর বাউফল,ঘুরচাকাঠী গ্রাম
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close