reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সীমান্তে থামেনি গোলাগুলি, আতঙ্কে বাড়িঘর ছাড়ছেন বাসিন্দারা

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরকান আর্মির মধ্যে গোলাগুলিতে প্রবীর চন্দ্র ধর (৫৯) নামের এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তিনি ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড তুমব্রু হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দীন। জানানা, তাদের চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতে আজ সকালে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪ সদস্য তুমব্রু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের ভেতরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক। এসব গোলাবারুদ আর বিস্ফোরকের বিকট শব্দে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ভোর থেকে মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে বাংলাদেশের একজন আহত হয়েছে। এর আগে ভোরে মর্টারশেল এসে বসতঘরে পড়ে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে দেশটির জান্তা বাহিনীর ১৪ সদস্য আশ্রয় নিয়েছে তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পে। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে আছেন। আমরা সবাইকে বলেছি কোনো কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে।

এই অবস্থায় স্থানীয়দের সরানো হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। আমি কিছু বলতে পারব না।

এদিকে সীমান্তে এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।

তুমব্রুর উত্তরপাড়া স্থানীয় বাসিন্দা খায়রুল আমিন বলেন, যেভাবে মিয়ানমার থেকে গুলি এপাড়ে এসে পড়ছে তাতে পরিবার ও নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না। আপাতত উখিয়ায় বোনের বাসায় আশ্রয় নিচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরব।

খালেক নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, গতকাল সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে পড়েছে। আজ এক কৃষকের শরীরে। ভোরে বসতঘরে। এমন পরিস্থিতিতে কেউ নিরাপদ নয়। তাই অন্য জায়গায় যাচ্ছি। সীমান্তের পরিস্থিতি এখনো থমথমে। আমরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছি।

ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া বলেন, এখানকার পরিস্থিতি এই মুহূর্তে কিছুটা স্বাভাবিক আছে। সীমান্ত এলাকায় কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিজিবি ও আমরা তৎপর আছি। আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছাড়ার খবর তেমন নেই।

এদিকে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে সীমান্তের ১০০ গজ দূরত্বে থাকা মিশকাতুন নবী দাখিল মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান বান্দরবান জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী।

অন্যদিকে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close