এম এ লিতু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ

৭০ শিক্ষকসহ সুন্দরবন ভ্রমণে শিক্ষা কর্মকর্তা, পাঠদান ব্যাহত

কালীগঞ্জ উপজেলা মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে অনুমতি ছাড়াই চার দিনের জন্য আনন্দ ভ্রমণে (পিকনিক) সুন্দরবনে যান উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ জন শিক্ষক। তাদের সঙ্গে ছিলেন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও)। রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত তারা ফিরে না আসায় একাধিক বিদ্যালয়ের পাঠদান অনেকটাই স্থবির ছিল।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এই ঘটনা ঘটে। রবিবার সন্ধ্যায় তারা ফিরেছেন জানা গেছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্কুল খোলা রেখেই শিক্ষকরা ভ্রমণে যাওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর একটার দিকে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসানের সঙ্গে শিক্ষকরা চার দিনের আনন্দ ভ্রমণে সুন্দরবন যান। এ জন্য কেউ কেউ ছুটি নিয়েছেন বলে জানানো হলেও অধিকাংশ শিক্ষকই ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি জানতে রবিবার উপজেলার মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ তিনজন ভ্রমণে গেছেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন আসিমা বিশ্বাস।

সাংবাদিকদের আসিমা বিশ্বাস জানান, তাদের বিদ্যালয়ে মোট ৫ জন শিক্ষক। এর মধ্যে ৩ জন শিক্ষক পিকনিকে গেছেন। এ কারণে বিদ্যালয়ের ক্লাস নেওয়া সমস্যার হওয়ার কথা কথা স্বীকার করলেও দুজনেই ক্লাস চালিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। তবে বিদ্যালয়ের মুভমেন্ট খাতায় প্রধান শিক্ষকসহ তিনজনের ছুটি নিয়ে ভ্রমণ বা পিকনিকে গেছেন এমন কিছুই লেখা পাওয়া যায়নি।


  • চার দিনের ভ্রমণে যেতে অধিকাংশ শিক্ষকের ছলচাতুরীর আশ্রয়
  • শিক্ষক স্বল্পতায় পাঠদান ব্যাহত, অভিভাবকদের ক্ষোভ
  • অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার

বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অর্চনা বিশ্বাস জানান, প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জনের ছুটির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে অন্যদের থেকে তিনি শুনেছেন, শিক্ষকরা ভ্রমণে গেছেন।

উপজেলার দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পারভিনা আক্তার জানান, তার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ রতন এক দিনের ছুটির দরখাস্ত দিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে পিকনিকে গেছেন। রবিবারও ফিরে না আসাতে বিষয়টি তিনি এটিওকে অবহিত করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বেলাট দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনজন ও দূর্গাপুর বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে পিকনিকে যাওয়া শিক্ষকদের অধিকাংশই ছুটি না নিয়ে কাগজপত্রে ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসান বলেন, বিদ্যালয় খোলা থাকলে একসঙ্গে একাধিক শিক্ষকের ছুটি বা ভ্রমণে যাওয়া অপরাধ। আর এক বিদ্যালয় থেকে একাধিক শিক্ষক ভ্রমণে যাচ্ছেন এমন বিষয়টি তিনি জানেন না। বৈধভাবে ছুটি না নিয়ে ভ্রমণে যাওয়া শিক্ষকদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ মোহন কিশোর সাহা বলেন, ‘একই সময়ে এক বিদ্যালয় থেকে একাধিক শিক্ষক ভ্রমণে যাওয়া আইন সম্মত নয়। বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারলাম।’ খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close