সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪

রেলওয়ের জমি বেদখল, থেমে নেই কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলবিভাগের দায়িত্বশীল কোনো অভিভাবক না থাকায় প্রায় প্রতিদিনই রাতে রেলকারখানার যন্ত্রাংশ চুরি ও কোয়ার্টার সহ প্রায় সাড়ে ৪০০ একর ভূসম্পতি বেদখল হয়ে গেছে। রেলবিভাগের সম্পদ রক্ষার্থে একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী, সহ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকলেও কারখানার যন্ত্রাংশ চোর সহ ভ‚মিদস্যুদের সঙ্গে যোগসাজশ থাকায় অভিযোগ দিয়ে ও প্রতিকার নেই বলে অভিযোগ একাধিক মহলের।

সৈয়দপুর রেল সূত্রে জানা গেছে, ১৮৭০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের বিশাল কারখানা গড়ে উঠে সৈয়দপুরে। এর প্রতিষ্ঠা লগ্নে প্রায় ১২ হাজার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৮৬ সাল থেকে শ্রমিক ছাটাইয়ের ফলে বর্তমানে জনবল দাড়িয়েছে প্রায় ২ হাজারের মতো। কারখানাটিতে তৎকালীন সরকার কারখানার সার্বিক দায়িত্বে নিযুক্ত করেন বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) কে। ওই সময় শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ৮০০ একর সম্পত্তিতে প্রায় ৩ হাজার কোয়ার্টার, আবাসিক ভবনসহ পতিত জমিতে রোপনকৃত গাছ রক্ষার্থে দায়িত্ব দেওয়া হয় উপসহকারী প্রকৌশলী (আবাসিক) ও সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলীকে। তৎকালীন সরকার এর আইন মোতাবেক ১৮৭০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ওইসকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে আসছিলেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালের পর শ্রমিক ছাটাইয়ের ফলে শুরু হয় কারখানার দামি যন্ত্রাংশ চুরি। একইসঙ্গে বেদখল হতে থাকে কোয়ার্টার সহ ভূসম্পত্তি।

রেলওয়ে কারিগরি পরিষদের কেন্দ্রিয় নেতা ও সৈয়দপুর কারখানা শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, সৈয়দপুর রেলবিভাগের এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৩৯টি কোয়ার্টার বেদখল হয়ে গেছে। একই সঙ্গে বেদখল হয়েছে ৪২৭ একর ভ‚সম্পত্তি। জনবল সংকটে কারখানায় কাজকর্ম না থাকায়, দামি অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হতে থাকে। এরপরেও ওইসব যন্ত্রাংশের মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিল প্রায় হাজার কোটি টাকা। একইসঙ্গে বেদখল হয়ে যাওয়া কোয়ার্টার ও বেদখল হয়ে যাওয়া ভ‚সম্পত্তির বেসরকারিভাবে মূল্য নির্ধারন হয় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয়রা রেলওয়ে কর্মকর্তাদের বারবার অভিযোগ করলেও সম্পদ রক্ষার্থে পদক্ষেপই নেওয়া হচ্ছে না। কোয়ার্টার দখল বিক্রয় ও পতিত জমি দখল করে নির্মাণ হচ্ছে পাকা ঘরবাড়ি ও বহুতল ভবন।

সৈয়দপুর শহরের ভজে পাড়া সংলগ্ন রেলওয়ের জমিতে সদ্য বহুতল ভবন নির্মাণকারি মিন্টু বলেন, ‘সকলে যেভাবে রেলের জায়গায় ঘরবাড়ি বানাচ্ছে, আমিও সেভাবেই নির্মাণ করছি। রেল বিভাগ বরাদ্দ দিলে কেউই অবৈধভাবে রেলের জায়গায় ঘরবাড়ি নির্মাণ করতো না।’

পার্বতীপুর ৭ নম্বর রেলওয়ে কাচারির ফিল্ড কানুনগো সাজ্জাদ হোসেন দখলের সত্যতা স্বিকার করে বলেন, রেলওয়ের যেসব সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে খতিয়ান ভুক্ত হয়েছে। সেসব জমির রেকর্ড সংশোধনী মামলা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (আবাসিক) শরিফুল ইসলাম জানান, রেলওয়ের জমি অবৈধভাবে দখলকারিদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ছাড়া কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নীলফামারীর সৈয়দপুর,সৈয়দপুর রেলবিভাগ,রেলকারখানার যন্ত্রাংশ চুরি,ভূসম্পতি বেদখল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close