শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪

শ্রীপুরে বর্ণিল আলপনায় আঁকা কেওয়া পশ্চিমখণ্ড প্রাথমিক 

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

গাজীপুরের শ্রীপুরে বর্ণিল আলপনায় আঁকা কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের ভেতরে, বাইরে, সামনে বারান্দা, সিঁড়ি, মেঝে ও আশপাশ সর্বত্র রাঙিয়ে তোলা হয়েছে আলপনা। দেয়ালে আঁকা হয়েছে বাংলাদেশের রূপ। রয়েছে স্বাস্থ্য সেবা, পাঠাগার, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নামাজের জায়গা, সাজানো অফিস।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিকে প্রবেশ করতেই মাঠের উত্তর পাশে দোতলা ভবন। ওই ভবনেই চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। দ্বিতল ভবনটির বারান্দায় প্রবেশ করতে চোখে পড়ে দেয়ালের বিচিত্র রূপ। এ যেন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। দেয়ালজুড়ে বিভিন্ন রঙে আঁকা হয়েছে গাছপালা, পশুপাখি, পাঠ্যবইয়ের অলংকরণ। কোথাও আবার স্থান পেয়েছে দেশের বিশিষ্ট লেখক, কবি-সাহিত্যিকদের ছবি। দক্ষিণ পাশে দোতলাবিশিষ্ট ভবন, শহীদ মিনার। মাঠের দক্ষিণ পাশে রয়েছে শহীদ মিনার, সঙ্গে আরেকটি দোতলাবিশিষ্ট ভবনে রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার, শেখ রাসেল পাঠাগার। পশ্চিমে আধা পাকা একটি পুরোনো ভবনে রয়েছে শিক্ষার্থীদের নামাজের জায়গা। ভবনের পাশেই আরেকটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহানাজ পারভীন বলেন, পুষ্টির প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের ডিম খাওয়ানো হয়। প্রতিটি উৎসবে দেওয়া হয় খাবার, মিষ্টি। এ ছাড়া তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাতা, কলম, স্কুল ব্যাগ বিদ্যালয় থেকেই বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়। বর্ষায় শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় ছাতা, শীতে বিনামূল্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। তাদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য একজন চিকিৎসক তাদের কাউন্সেলিং করেন। এসব সম্ভব হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদায় ইয়াসমিন ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলামের চেষ্টায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা মেহজাবিন জানায়, স্কুলের রঙিন পরিবেশ তার ভীষণ ভালো লাগে। প্রতিদিন স্কুলে আসার অপেক্ষায় থাকে সে। একই ভাষ্য পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তারের। সে জানায়, স্কুলটিতে সবকিছু বিনা টাকায় পাচ্ছে সে। কোনো কিছু কিনতে হচ্ছে না। স্কুল থেকে খাবার পাওয়ায় টিফিন খরচও লাগে না তার।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০২ জনে। শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে। তারা আগ্রহ নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসে। তাদের আনন্দের মধ্য দিয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন স্কুলটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কামরুল ইসলাম। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করার জন্য তিনি নিজ অর্থায়নে শ্রেণিকক্ষ, বারান্দা ও অফিসকক্ষ সুন্দর করে সাজিয়েছেন। নিজের খরচে শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার, স্কুল ব্যাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন বলেন, বিদ্যালয়টি বিশেষ ব্যবস্থাপনা শিক্ষার্থী সহায়ক। অন্য বিদ্যালয়ও এভাবে শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগ নিতে পারে।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গাজীপুরের শ্রীপুর,কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close