নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

ইইউর প্রতি পাট ও চামড়া খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

বাংলাদেশের পাট ও চামড়া খাতে বিনিয়োগ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। গত সোমবার মন্ত্রণালয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পণ্যের রপ্তানি বহুমুখীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটজাত এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যকে এগিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন।’ পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল বিশেষ করে এপিআই খাত, অ্যাগ্রো প্রসেসিং, সি ফুড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য, বাইসাইকেল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষিপণ্যে দক্ষতা, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও গুণগতমান উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ট্রেড ও রেগুলেটরিসংক্রান্ত বাধা দূর করে আমদানি ও রপ্তানি পলিসি যুগোপযোগী করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি এবং বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিচ্ছে।’ এ বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশে অবস্থিত সব মিশনের প্রধান এবং ট্রেড/কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের নিয়ে মেলা পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশে উৎপন্ন পণ্য প্রদর্শনের সবচেয়ে বড় আসর এই মেলা। এখানে অনেক বিদেশি প্যাভিলিয়নও থাকে। মিশন কর্মকর্তাদের মেলা পরিদর্শনের মাধ্যমে বাংলাদেশি পণ্যের ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব হবে।’ যেসব পণ্য ইইউ ও যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে, সেসব পণ্য কন্ট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদনের আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গা হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। অনেক দেশ নির্ধারিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়াও শিল্প-কলকারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।’ বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আগামী ২৬-২৯ ফেব্রুয়ারি আবুধাবিতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন আয়োজিত মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অবস্থানের পক্ষে প্রয়োজনীয় সমর্থনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার কামনা করেন।

হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র। বর্তমানে উভয় দেশের চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে।’ উন্নয়ন সহযোগিতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে তিনি অংশীদারত্বের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ পেশাদারি খাতে সার্টিফিকেশন ও অ্যাক্রেডিটেশন সমতায়নে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার। বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক বাধা দূরীকরণ, সেবা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্বের প্রয়োগ ও সংরক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উদারীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সারাহ কুক। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তার প্রশংসা করে ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইটিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close