নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণসহায়তা
‘এডিবির ২ বিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড়ের প্রত্যাশা’
* রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারকে ২০ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এডিবি * প্রথম কিস্তিতে ১০ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এডিবির অর্থ ছাড়ের গতি বেশ ভালো। আগামী বছর এ গতি তারা আরও বাড়াবে। এ বছর (সদ্যসমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে) তারা এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড় করেছে। আগামী বছর (চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছর) বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ সহায়তার অংশ হিসেবে এডিবি দুই বিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড় করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
গতকাল সচিবালয়ে বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারকে ২০ কোটি ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এডিবি। ইতোমধ্যে ১০ কোটি ডলার ছাড় করেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে সেসব প্রকল্পেই এই অর্থ তারা দেবে। বাকি ১০ কোটি টাকা ডলার আগামী অর্থবছরে দেবে। এডিবির জন্য এ ধরনের অনুদান দেওয়া কঠিন। তারপরও তারা ব্যতিক্রম করে অনুদান দিয়েছে। এ জন্য মুহিত এডিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য এডিবির অনুদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গা বিষয়ে সারাবিশ্ব আমাদের সঙ্গে রয়েছে। অর্থ সহায়তার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরতে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর নিকট আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ এতগুলো রোহিঙ্গার দায়িত্ব আমাদের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।
মুহিত বলেন, বিশ্ব রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের প্রতিশ্রুতির অনুদানের পুরোটাই দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বাংলাদেশের বিষয়ে ইমপ্রেসড। তিনি দুইবার বাংলাদেশে এসেছেন। দুইবারই বাংলাদেশের খুব প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে তিনি খুব আনন্দিত। বাংলাদেশের প্রতি তার একটা সফট কর্নার রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ সাংবাদিকদের বলেন, এডিবির অনুদান দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু রোহিঙ্গাদের বিষয়টি খুব বেশি মানবিক। তাই তাদের ডোনারদের কনভেন্স করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় নিয়ম ভেঙে বাংলাদেশ সরকারকে ২০ কোটি ডলার অনুদান দিচ্ছে এডিবি। তিনি বলেন, ২০ কোটি ডলার সহায়তার প্রথম কিস্তিতে ১০ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। বাকি ১০ কোটি ডলার শিগগিরই ছাড় করা হবে। এসব অর্থ রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়, খাবার পানি, স্বাস্থ্য সেবা, পয়ঃনিষ্কাশন এবং অন্যান্য জরুরি সেবায় ব্যবহৃত হবে। এডিবির একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কাজ করছে। তারা এসব অর্থের সদ্ব্যবহারে একটি প্রকল্প দাঁড় করাচ্ছে।
জানা যায়, গত মে মাসে এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার অনুরোধ পাওয়ার পর ২০ কোটি ডলার দেওয়ার এই উদ্যোগ নেয় এডিবি। এর প্রথম কিস্তির ১০ কোটি ডলার দিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবাসন নির্মাণ করা হবে, যেখানে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পে সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে, যাতে খাদ্য সরবরাহ, মজুত, হাসপাতাল ও স্কুলে যাওয়া-আসার পথ সহজ হয়।
"