আমিন আশরাফ

  ০৭ এপ্রিল, ২০১৭

জিন বাহাদুর

আব্বু! আপু এমন করছে কেন?

তোমার আপু অসুস্থ।

অসুস্থ হলে তো চুপ করে শুয়ে ব্যথায় কান্না করবে। আপু তো গান গাইছে, নাচছে। আর আমি সামনে গেলে মারতে আসে। আব্বু, আমি আর আপুর কাছে যাব না। আপু পচা পচা কথা বলে। আমাকে দেখে দাঁত খিঁচিয়ে শরীরে চিমটি কাটে। ব্যথা পাচ্ছি বললে আরো জোরে চিমটি কাটে। আপু তো কখনো এমন ছিল না। আমাকে সব সময় কোলে নিত, আদর করত, চুমু দিত। আচ্ছা আব্বু! আপুর কী অসুখ হয়েছে।

বললাম তো, তোমার আপু অসুস্থ। তুমি ছোট মানুষ, বুঝবে না।

কেন বুঝবো না, বাবা! আমি অতটা ছোট নই। টুতে পড়ি। সেদিন খালামণি বলেছে, আমি নাকি অনেক বড় হয়ে গেছি। আগে এই এতটুকুন ছিলাম। সে হাত দিয়ে দেখায়।

বাবা! তুমি এবার চুপ করে বসো। কথা বলবা না। ছোটদের এত কথা বলতে নেই।

কেন বলতে নেই বাবা!

সালাম সাহেবের এমনিতে কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছে না, তার ছোট ছেলের উপর্যুপরি প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে তিনি বাইরে এলেন। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানির নগণ্য একজন কর্মচারী। বেতন যা পান, তাতে কোনো রকম টেনেটুনে মাসটা পার করতে পারেন। বাড়তি স্বাদ-আহ্লাদ সেখানে বিলাসিতাই বটে। স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য মাসের পর মাস ওষুধ কিনতে কিনতেই ফতুর। মাসটা পার হয় না, দশ দিন থাকতেই দোকানে বাকি পড়ে যায়। একসময় তিনি দোকান থেকে চাকরিজীবীদের বাকি কেনাকে পছন্দ করতেন না। কারণ, বাকি সদাইপাতি কিনলে প্রতিটি পণ্যে দুই থেকে দশ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাখে। সেই সময়টা তার খুব সুখের ছিল। কিন্তু হঠাৎ তার স্ত্রীর কঠিন রোগ হয়। এদিকে বাচ্চা দুটিও বড় হতে থাকে। ধীরে ধীরে বাচ্চা বড় হয়ে যতই একের পর এক ক্লাস পাস করে যাচ্ছে, ততই তার খরচের হার বেড়ে যাচ্ছে। অথচ তার আয়ের উৎস আগেরটাই রয়ে গেছে। এদিকে, আবার স্ত্রী অসুস্থ। সালাম সাহেবের স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে। বাচ্চাদের ভালো কাপড়-চোপড় এবং খাবার জোগাড় করা তার জন্য মহাকঠিন হয়ে গেছে। পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে না পারায় মেয়েটা কেমন যেন রোগাটে হয়ে গেছে। এত কষ্ট করেও সে কলেজে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো সময় ঘরের খাবার তার মুখে না রুচলেও অন্যদের চিৎকার-চেঁচামেচি করে না লক্ষ্মী মেয়েটি। যা ঘরে আছে, তা-ই গেলার চেষ্টা করে। বেশ কয়েকদিন যাবৎ মেয়ের দিকে তাকাতে সাহস পান না। মহুয়া দুই মাস আগে এক সেট জামা চেয়েছিল। কিন্তু সালাম সাহেব আজও তা কিনে দিতে পারেননি। বাবার অক্ষমতা বুঝে, সালাম সাহেবের নির্বাক চাহনি দেখে মহুয়া সান্ত¡না দেয়- বাবা, আমি লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা চাকরি করব, তখন আমাদের কোনো অভাব থাকবে না। সালাম সাহেব কিছু না বলে মেয়ের আত্মবিশ্বাসী মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তার শান্ত নদীর মতো মেয়েটি গতকাল কলেজ থেকে ফেরার পর থেকে অশুভ আচরণ শুরু করে দিয়েছে। যে মেয়ে পড়ালেখা, কলেজে যাওয়া আর মাকে টুকটাক রান্নায় সহযোগিতা ছাড়া কিচ্ছু বুঝত না, সেই মেয়ে এখন বাচ্চাদের মতো নাচছে, গাইছে; শিশুুদের মতো কান্না শুরু করে দিয়েছে- ‘ওরা আমাকে নিয়ে গেল’। মা ফারজানা দৌড়ে এসে সেখানে কাউকে পেলেন না। কিছুক্ষণ পরপর মহুয়া পাড়ার অশিক্ষিত মহিলাদের মতো বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করছে। হঠাৎ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে। হাসি যেন থামতেই চাইছে না। এক ভয়ানক অবস্থা। স্বামী-স্ত্রী দুজনে চরম ভয় পেয়ে তাদের কর্তব্য স্থির করতে পারছে না। ছোট ছেলেটা ভয় পেয়ে বাবার কাছে এসে, বাবার কাছে ঘেঁষতে না পেরে আবার মায়ের আঁচলে গিয়ে লুকিয়ে ভয়াতুর চোখে তাকাচ্ছে।

ঘরের বাইরে এসে আকাশের দিকে তাকালেন। আকাশের বিশাল একটা অংশ গাঢ় নীল হয়ে আছে। দূরে পেঁজা তুলার মতো মেঘ উড়ে বেড়াচ্ছে। অন্যদিন হলে আকাশের এই স্বচ্ছতায় তিনি হারিয়ে যেতেন। কষ্টগুলোর কথা আকাশের সঙ্গে পাড়তেন। কিন্তু সালাম সাহেবের মনে হলো, আকাশ তার দুঃসময়ে রসিকতা করছে। তা না হলে এমন সাজুগুজু করে থাকার কী দরকার ছিল। আকাশের এই আচরণ তার অসহ্য মনে হলো। তিনি চোখ ফিরিয়ে নিলেন। মনে চিন্তাগুলো আবার তার মগজ কামড়ে দিতে লাগল যেন। মেয়েটা হঠাৎ এমন করছে কেন। লোকজন বলাবলি করছে, মেয়েটাকে জ্বিনে ধরেছে। সালাম সাহেবের এসবে তেমন একটা বিশ্বাস নেই। কিছু প্রতিবেশী তার স্ত্রীকে বলে গেছে, মেয়েকে বদজ্বিনে ধরেছে। এটা কঠিন ব্যারাম, ফজলুল পীর সাহেব ছাড়া কেউ তাকে সুস্থ করতে পারবে না।

আর পীরকে না দেখালে মেয়ে পাগল হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে। নিজের ঘরে বসে এ কথা শুনে সালাম সাহেব আঁতকে উঠলেন। চোখের সামনে দেখতে পেলেন, তার মেয়ে উস্কখুস্ক চুল নিয়ে চিৎকার করছে। পাড়ার বাচ্চারা তাকে ধাওয়া করছে। ইট-পাটকেল ছুড়ছে। সালাম সাহেব আর ভাবতে পারেন না। তৎক্ষণাৎ উঠে পাশের বাড়ির করিমের ডাক্তার ছেলে রফিকের কাছে গিয়েছিলেন। সব শুনে রফিক কয়েকটি ঘুমের ওষুধ দিয়ে বলেছেন, ‘এই দুটি ট্যাবলেট নিয়ে যান, রাতে অর্ধেকটা করে খাওয়াবেন। তারপর অবস্থা আমাকে জানাবেন।’ ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর সারারাত ভালোই কাটে। কিন্তু ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর আবার একই অবস্থা। মহুয়ার এই অবস্থার কথা আশপাশের আর কারো জানার বাকি নেই। সবার একই কথা, ফজলুল পীরকে দেখাতে হবে। তিনি জ্বিন নামাতে পারেন। এই মেয়েদের জ্বিনে ধরাটা মারাত্মক, সহজে ছাড়তে চায় না। অনেকেই আবার ফজলুল পীরের জ্বিন নামানোর কাহিনী জুড়ে দিয়েছে। এক মহিলা বলছে, ‘আমার ভাসুরের মেয়ে নীলাকে জ্বিনে ধরেছিল। তারপর ফজলুল পীরের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর জানেন, কিভাবে জ্বিন পালিয়ে গিয়েছিল...!’ আরেকজন বলছে, ‘রশিদের পোয়াতি মেয়েটাকে ধরেছিল। তারপর...!’ একজন অপরজনকে গল্প বলে যাচ্ছে। জ্বিনে ধরার গল্প। আজ যেন এরা তার মেয়েকে দেখতে এসে গল্পের হাট জমিয়েছে। ফজলুল পীরের টাকা ছাড়া বিজ্ঞাপন চলছে। সালাম সাহেব এসবে না থাকলে কী করবেন, ‘দশের কথায় মরণও ভালা’- এই প্রবাদবাক্যের কথা আজ মানতে বাধ্য হলেন। মেয়েকে নিয়ে পীরের কাছে যাওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেললেন।

পীরের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছেন সালাম সাহেব। পীর সাহেব বসে আছেন দামি এক ফরাশের ওপর। তাকে ঘিরে দুইজানু হয়ে বসে আছে অনেক ভক্ত-মুরিদ। তিনি চোখ বন্ধ করে মুখে বিড়বিড় করে কী যেন পড়ছেন। হয়তো কোনো দোয়া-কালাম। পানের লালা ঠোঁট বেয়ে পড়লে একজন খাদেম একটু পরপর তোয়ালে দিয়ে মুছে দিচ্ছে। আলো-আঁধারিতে তিনি মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলেন, মহুয়া চুপচাপ বসে আছে। তিনি মাঝেমধ্যে পীরের দিকে তাকাচ্ছেন, আবার মুরিদদেরকেও দেখছেন। সবাই চুপ করে আছে। পিনপতন নীরবতা। ঘরটায় একটা গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ। সালাম সাহেব মেয়েকে অনেক কষ্ট করে পীরের কাছে এনেছেন। কোনোভাবেই ও এখানে আসতে রাজি নয়। মহুয়া বাবার হাত থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছিল আর বলেছিল-

আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আব্বা!

পীর সাহেবের কাছে। তিনি খুব ভালো মানুষ। দেখ, তুমি সেখানে গেলেই ভালো হয়ে যাবে।

আমি তো ভালোই আছি, আমাকে নিশ্চয়ই মারতে নিয়ে যাচ্ছো। আমি সেখানে যাব না।

মহুয়া বাবার হাত থেকে বার কয়েক নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে আচানক কেন যেন নীরব হয়ে গেল। কিছু না বলে বাবার সঙ্গে চলতে শুরু করল। সালাম সাহেব অবাক হওয়ার পরও কিছু না বলে মেয়েকে নিয়ে চলতে শুরু করলেন। সালমান বাবার হাত ধরে বলল, ‘বাবা, আমিও যাব।’ সালাম সাহেবের মাথা এমনিতেই বিগড়ে আছে, দরজায় দাঁড়ানো স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ওকে নিয়ে ঘরে যাও।

অনেকক্ষণ পর পীর সাহেব চোখ খুললেন। খাদেম পীর সাহেবকে কিছু বলতে চাইলে পীর সাহেব তাকে হাত উঁচু করে থামিয়ে দিলেন। বললেন, ‘মেয়ের বাপ কে?’ ‘আমি’- বলে সালাম সাহেব পীরের সামনে গেলে মুরিদরা সরে তাকে জায়গা করে দিল। মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলেন, মেয়ে চুপচাপ বসে আছে। পীর সাহেব বললেন, ‘তোমার মেয়েকে ইয়েমেনের এক বদজ্বিনে ধরেছে। খুব তাড়াতাড়ি তার চিকিৎসা করতে হবে। তা না হলে বদজ্বিন কখনো তোমার মেয়েকে ছাড়বে না। আজীবনের জন্য তোমার মেয়ের ওপর ভর করে থেকে যাবে।’ সালাম সাহেব হাতজোড় করে বললেন, ‘হুজুর, আমার একটা মাত্র মেয়ে। আপনি যেভাবে পারেন মেয়েকে সুস্থ করে দিন।’

আমি সুস্থ করব কিভাবে? সবই জ্বিন বাহাদুরের মর্জি। পীর সাহেব শূন্যে হাত উঁচু করে বললেন, ‘তাকে যদি সন্তুষ্ট করতে পার।’ সালাম সাহেব আবারো হাতজোড় করে বললেন, ‘কিভাবে হুজুর!’ পীর সাহেব বললেন, ‘এর জন্য ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।’

শুনে সালাম সাহেব দ্বিতীয়বার আওড়ালেন, ‘৫০ হাজার টাকা।’

হ্যাঁ! ৫০ হাজার টাকা। তুমি গরিব বলে জ্বিন বাহাদুর তোমার ওপর দয়া করেছেন। তুলারাশির মাধ্যমে আমাকে তার মনোবাসনার কথা জানিয়েছেন। অন্যথায় এক লাখের কমে তিনি রাজি হতেন না। জ্বিন বাহাদুর যত তাড়াতাড়ি সন্তুষ্ট হবেন, তোমার মেয়ে তত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। জ্বিন বাহাদুর একজন কামেল জ্বিনের সেনাপতি। তার বাহিনীকে খাইয়ে-দাইয়ে সন্তুষ্ট করলে তারা তাজাদম হয়ে বদজ্বিনদের পরাজিত করে তাড়িয়ে দেবে। এরপর থেকে তোমার মেয়ের ওপর আর কোনো দুষ্ট জ্বিন আছর করতে পারবে না। আর তাদের খাবার হলো হাড্ডি ও কয়লা। ইয়েমেন থেকে হাড্ডি ও কয়লা আনতে হবে। তুলারাশির জ্বিনদলের মাধ্যমে এগুলো ইয়েমেন থেকে জোগাড় করতে হবে। আর এগুলো জোগাড় করা কতটা কঠিন, তা তুমি বুঝবে না। যাও, মেয়েকে নিয়ে বাড়ি যাও! টাকার ব্যবস্থা করে নিয়ে এসো।

সালাম সাহেব ৫০ হাজার টাকার কথা শুনে সেই যে চুপ করে ছিলেন, তারপর আর কোনো কথা বলেননি। চুপচাপ শুনে গেলেন। পীর সাহেব চলে আসার কথা শুনে মেয়ের হাত ধরে চুপচাপ পীরের দরবার থেকে বেরিয়ে এলেন। মেয়েটি বাড়ি এসে আবার সেই আগের পাগলামি শুরু করে দিয়েছে।

ফারজানা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন স্বামীর দিকে। সালাম সাহেব পীর সাহেবের ৫০ হাজার টাকা দাবি করার কথা বললেন। শুনে ফারজানাও ‘থ’ বনে গেলেন। তার স্বামী এক বছরে যেখানে ৫০ হাজার টাকা মাইনে পায় না, সেখানে কোত্থেকে তারা এত টাকা জোগাড় করবে। স্ত্রী হতাশ হয়ে বললেন, ‘আমার কাছে কিছু টাকা আছে। তবে এ দিয়ে কী হবে। ডিম বেচে পাঁচ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম, তোমাকে বলিনি, বিপদের দিন কাজে লাগবে বলে।’

পাঁচ হাজার টাকা আছে! সালাম সাহেব যেন লাফিয়ে উঠলেন। কৃতজ্ঞতার চোখে স্ত্রীর তাকিয়ে অনুনয়ের সুরে বললেন, ‘মাসের আজ ৩০ তারিখ। বেতন পেতে আরো দুই দিন আছে। ভাবছিলাম, কিছু টাকা হলে পীর সাহেবের কাছে আর মেয়েকে নিয়ে যাব না, শহরে হাসপাতালে নিয়ে যাব।’ কী বলেন আপনি! পীর সাহেবের কাছে নিয়ে যাবেন না? সবাই বলছে, মেয়েকে জ্বিনে ধরেছে। ডাক্তার, হাসপাতাল কোনো কাজে লাগবে না। মহুয়াকে সুস্থ করতে পীর সাহেবের কাছে যেতেই হবে। আমার আগে থেকে এই পীরে বিশ্বাস নেই। তোমার কথায় পীরের কাছে গিয়েছিলাম। পীর সাহেবের কাছে নিয়ে যেতে না যেতেই কিভাবে সে বুঝে ফেলল, মেয়েকে জ্বিনে ধরেছে। মেয়ের তো অন্য সমস্যাও হতে পারে। তুমি টাকাটা দাও, তাকে আজই হাসপাতালে নিয়ে যাব।

ফারজানা টাকা দেওয়ার পর সালাম সাহেব মেয়েকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেন। মানসিক ডাক্তার চেকআপ করার পর একটি স্যালাইন এবং একটি ঘুমের ইনজেকশন পুশ করলেন। মেয়ে তার কতক্ষণ চিৎকার-চেঁচামেচি করে নিস্তেজ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ডাক্তার সালাম সাহেবের পিঠে হাত দিয়ে বললেন, ‘চিন্তা করবেন না, আপনার মেয়ে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।’

তিন দিন পর সালাম সাহেব সুস্থ মেয়েকে ঘরে নিয়ে এলেন। মহুয়া বাড়ি আসতেই সালমান তার আপুর কোলে চেপে বসল। সালাম সাহেবের হাসপাতালে যাওয়া-আসা বাবদ তার সাকল্যে খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। মেয়ে এমন হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডাক্তার বলেছেন, ‘আপনার মেয়েকে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করান। না খেতে খেতে আপনার মেয়ে এমন দুর্বল হয়ে গেছে। তাকে বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।’ সালাম সাহেব ডাক্তারের কথা অস্বীকার করতে পারেননি। পারেননি বলতে, না না আমার মেয়েকে তো ভালো খাবার খেতে দেই। সত্যিই তো! মহুয়া সেই সাতসকালে কোনোকিছু না খেয়ে কলেজ যায়। তারপর দু-দুটি জায়গায় ছাত্র পড়িয়ে মাগরিবের সময় বাসায় ফেরে। তারপর টেবিলে ঢেকে রাখা ঠা-া খাবার দুই লোকমা খেয়ে চুপচাপ আবার পড়তে বসত। এটাই মহুয়ার প্রতিদিনের রুটিন। তিনি পারেননি তার জন্য ভালো কিছুর ব্যবস্থা করতে। তিনি স্বগতোক্তি করলেন, ‘না না, এমনটা আর কখনো হবে না।’ সালাম সাহেবের দু’চোখ বেয়ে দরদর করে লোনাজল গড়িয়ে পড়ল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist