টস জিতলে আগে বোলিং নিয়ে ম্যাচ জেতা যায়। বিপিএলের প্রথম তিন ম্যাচের সুর যেন একই। এদিন টসভাগ্য পক্ষে এলো ফরচুন বরিশালের। এ সুবিধা কাজে লাগাতে বল হাতে জ্বলে উঠলেন খালেদ আহমেদ। তার তোপের পর কাবু হওয়া রংপুর রাইডার্স আর সেভাবে ডানা মেলতে পারল না। পরে রান তাড়ায় প্রায় ৪ মাস পর খেলতে নেমে তামিম ইকবালের শুরুর ঝলক অনেকটাই এগিয়ে দিল তাদের।

গতকাল শনিবার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দলের লড়াই দেখতে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছিলেন বিপুল দর্শক। ভরা আমেজে বিপিএলের দশম আসরে ভালো শুরু পেল বরিশাল। ফেভারিট রংপুরকে ৫ উইকেটে হারাল তারা। আগে ব্যাট করে শেখ মাহেদী হাসানের ১৯ বলে ২৯ রানে ভর করে ১৩৪ করে রংপুর। তাদের দেড়শ’র অনেক নিচে আটকে ৪১ রানে ৪ উইকেট নেন খালেদ। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে যা তার ক্যারিয়ার সেরা ফিগার। রংপুরের ওই পুঁজি ৫ বল আগে তুলে নেয় বরিশাল।

১৩৫ রান তাড়ায় নেমে আজমতুল্লাহ ওমরজাইর প্রথম ওভারেই তিন বাউন্ডারি মারেন তামিম। ইব্রাহিম জাদরানও ভালো শুরুর আভাস দিচ্ছিলেন পঞ্চম ওভারে বল করতে এসে সাকিব ফেরান জাদরানকে। তিনে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজ শুরু করেন ছক্কা দিয়ে। পাওয়ার প্লের পর অবশ্য তামিমের রান বের করার জায়গা কমে যায়। মোহাম্মদ নবীকে এগিয়ে এসে ছক্কা মারার পরের বলে একই চেষ্টায় গিয়ে স্টাম্পিং হন তিনি (২৪ বলে ৩৫)। চারে নেমে সৌম্য সরকার হাসান মুরাদকে স্লগ করতে গিয়ে উঠিয়ে দেন সহজ ক্যাচ। খানিকটা তাল হারানো বরিশালের ইনিংসে এরপর স্থিতধি পরিস্থিতি আনেন মুশফিকুর রহিম। ১৮ বলে ২০ করে মিরাজ ফিরে যাওয়ার পর অভিজ্ঞ শোয়েব মালিককে এগোচ্ছিলেন তিনি। তবে কাজ অসমাপ্ত রেখে মুশফিক ২৬ করে ফিরলে সামান্য টুইস্টের আভাস ছিল। সেটা উবে গেছে শোয়েব ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। পাকিস্তানি ব্যাটার ১৮ বলে অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে, অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ সাতে নেমে ১১ বলে ১৯ করে শেষ করে দেন ম্যাচ।

দুপুরে টস জিতে খালেদই বেঁধে দেন সুর। প্রথম উইকেট অবশ্য পান মোহাম্মদ ইমরান। ব্র্যান্ডন কিংকে বোল্ড করে দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে এসে রনি তালুকদার ও সাকিবকে পর পর তুলে নেন তিনি। পাওয়ার প্লের মধ্যে ওমরজাইকেও আউট করে দেন দেন দুনিত ভেলালাগে। ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে নড়ে ওঠা রংপুর এরপর এগিয়েছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। পাঁচে নেমে শামীম পাটোয়ারী ৩৪ করলেও লাগিয়ে দেন ৩৩ বল। রংপুরের রান লড়াইয়ের জায়গায় নিয়ে যান শেখ মাহেদী। ১৯ বলে ৪ বাউন্ডারি, ১ ছক্কায় ২৯ করেন তিনি। তবে আরো অন্তত ১৫ রান করতে পারলে খেলার ফল নিজেদের দিকে নিতে পারত রংপুর। এদিকে শনিবার সকাল থেকে বেশ আলোচনায় পাকিস্তানের ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। দিনের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের তৃতীয় বিয়ের ছবি দিয়ে আলোচনায় আসেন শোয়েব। তৃতীয় বিয়ে মানেই ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে, তা

নিশ্চিত হয়ে যায়। এ নিয়ে দুই পক্ষ থেকে খুব বেশি কথা হয়নি। তাই তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো কিছুর ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল না। বিপিএল খেলতে শোয়েব শুক্রবার রাতে দুবাই থেকে ঢাকা এসেছেন। শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন বরিশালের জার্সিতে। গত বছর রংপুরের হয়ে খেলতে এসেছিলেন। এবার সেই দলকে হারিয়ে বিপিএল সফর শুরু হলো তার। দলকে জেতাতে ভূমিকাও রেখেছেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭ রান করে অপরাজিত থেকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটার।

এদিকে ১৭ রানের ছোট্ট ইনিংস খেলার পথে অন্যরকম এক রেকর্ড গড়েছেন পাকিস্তানের এ কিংবদন্তি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। নামের পাশে ১২৯৯৩ রান নিয়ে নেমেছিলেন মিরপুর শেরেবাংলায়। ৫২৬ ম্যাচে তার রান এখন ১৩০১০। তার চেয়ে এ ফরম্যাটে শুধু বেশি রান আছে ক্রিস গেইলের। ৪৬৩ ম্যাচে গেইলের রান ১৪৫৬২। এরপরই অবস্থান করছেন শোয়েব। তাদের পর আছেন কাইরন পোলার্ড (১২৪৫৪), বিরাট কোহলি (১১৯৯৪) ও অ্যালেক্স হেলস (১১৮০৭)।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রাইডার্স : ১৩৪/৯; ২০ ওভার (শামীম ৩৪,

মাহেদি ২৯; খালেদ ৪/৩১)

ফরচুন বরিশাল : ১৩৮/৫; ১৯.১ ওভার (তামিম ৩৫,

মুশফিক ২৬; সাকিব ২/১৬)

"