reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১২ মার্চ, ২০২৪

রাজকীয়তার ঊর্ধ্বে নিলার স্বপ্নযাত্রা

ফ্যাশন-বৈচিত্র্যের কথা চিন্তা করে দেশের দক্ষিণের জনপদ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে রাজকীয়তার ঊর্ধ্বে স্লোগানে যাত্রা শুরু হয় নিলা’স নামে একটি ফ্যাশন হাউসের। স্বল্পদৈর্ঘ্যরে এই পথচলায় প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ও পরিচালক জান্নাতুল ফেরদাউস নিলা পাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সাড়া। নিলার স্বপ্নের বাস্তবরূপ নিলা’স নিয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন জিহাদ হোসেন রাহাত

কেমন আছেন?

জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

স্বপ্নযাত্রার শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?

আমি আসলে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি ঢাকায়। তারপর রায়পুরের একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছি। পরে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমি ঢাকায় চলে যাই। স্বামীর আগ্রহ ও শাশুড়ির কৃতিত্বেই আমি পড়াশোনার পরবর্তী ধাপ শুরু করি। তাদের সাপোর্টের কারণে বিবিএ, বিবিএস, এমবিএ, এমবিএস ও এলএলবি শেষ করতে পেরেছি। স্বপ্ন দেখতাম আমি চাকরি করব, কারণ বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা- তাই আগ্রহটা বেশি ছিল। পরে কিছু করার তাগিদ থেকে আমি এমন একটি স্বপ্ন দেখা শুরু করি।

সাহসের জায়গাটা কীভাবে তৈরি হয়েছে?

আমার শ্বশুর ছিলেন একজন ব্যবসায়ী, পাশাপাশি স্বামী আবুল ফায়েজ মৌদুদুল কবিরও একজন ব্যবসায়ী। আমার সাহসের জায়গাটা মূলত এখান থেকেই তৈরি হয়েছে।

আপনার অনুপ্রেরণার উৎস নিয়ে বলবেন কী?

মা, বাবা আমাকে ছোট থেকেই একজন সাহসী রূপে তৈরি করেছেন। তারা, আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার অনুপ্রেরণার উৎস।

কোন ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন?

আমার উদ্দেশ্য ছিল মেয়েদের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা। পরে সমাজের সমণ্ডঅধিকারের কথা

চিন্তা করে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে শিশু,

নারী, পুরুষ- সবার পোশাক বিক্রির তালিকায় যুক্ত করেছি।

দাম ও মানের বিষয়ে কিছু বলবেন কী?

দাম আমি সহনীয় মাত্রায় রাখছি, তবে মানের বিষয়ে আমি আপসহীন। আমি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বিষয়ে খেয়াল রেখেই এগিয়ে যেতে চাই। রিকশাচালক থেকে শুরু করে সমাজের সবাই আমার কাছে সমান। সে কারণেই আমি রাজকীয়তার ঊর্ধ্বে স্লোগানটি ব্যবহার করছি। ব্যবসায়ে মুনাফা গড়া আমার একমাত্র লক্ষ্য নয়। মুনাফার পাশাপাশি আমি সেবা বণ্টন করতে চাই। আমি ভোক্তা সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাই।

ক্রেতাদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

আশা যতটুকু ছিল তার চেয়ে বেশি সাড়া পাচ্ছি। আমার শো-রুমটি মূলত উদ্বোধন করেছিলেন রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট। নারী হিসেবে নয় একজন মানুষ হিসেবে সবাই আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন। আমি আসলে এমনটি কল্পনাও করিনি। আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো চলছে। রায়পুরের মানুষজন ফ্যাশনসচেতন। ইনশাআল্লাহ অদূর ভবিষ্যতে নিলা’স হবে অধিকাংশ রায়পুরবাসীর প্রথম

পছন্দ।

বিক্রি কী শুধু অফলাইনেই চলছে?

আপাতত অফলাইনে পুরোদমে চলছে। তবে অনলাইনেও সাড়া পাচ্ছি। আমি মূলত কালচারাল ডাইভার্সিটিতে বিশ্বাস করি। আমার দোকানটিকেও যদি আমি বাঙালিয়ানা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অংশ দাবি করি, তবে বোধ করি আমার ভুল হবে না।

শুরুর আগে কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন কি না?

জি, গত মাস কয়েক আগে আমার হাতে ও পায়ে আঘাত পাই। যাবতীয় বিষয়ে আমার চাচাশ্বশুর, আমার হাসবেন্ডের বড় ভাইয়েরা, ফুপু শাশুড়িসহ সবাই আমাকে সাহস দিয়েছেন। অবশ্য আমার চাচাশ্বশুরও আমার অনুপ্রেরণার অংশ।

নিলা’স নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেমন?

নিলা’স দেশের সব জেলা-উপজেলায় থাকবে- এটা আমার স্বপ্ন। আমি পুরোদমে এগিয়ে যেতে চাই। জন্মজনপদ রায়পুর থেকে শুরু করেছি। বাবা-মা, পরিবার-পরিজন সবাই আমার জন্য দোয়া করেন। আমি বিশ্বাস করি তাদের দোয়ার বরকতে আমি সফল হবই হব।

নিলার স্বপ্ন রাজ্য নিলা’সে রয়েছে কসমেটিক, শাড়ি, শার্ট, প্যান্টসহ নারী, শিশু ও পুরুষদের পরিধেয় সামগ্রী। বছর তেরো বয়সি এক ছেলের জননী নিলা সংসার জীবনেও রয়েছেন বেশ সুখী অবস্থানে। সমাজ, সংসার, ব্যবসাসহ সব অঙ্গনে নিলার সক্রিয় পদচারণা তাকে করেছে জয়িতা শব্দের যোগ্য উত্তরসূরি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close