ফাহমিদা ইয়াসমিন
মাকে মনে পড়ে
মা ছোট একটি শব্দ। অথচ এই ছোট শব্দটির মর্মার্থ অপরিসীম। আমার কাছে একটা পৃথিবী একটা প্রেমের পুরাণ। মা ছাড়া বিশালাকার এই জগৎ সবার কাছে ধীরে ধীরে স্বল্প হয়। আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তিন বছর হয়ে গেল আমাদের ইহজগতের মায়া ত্যাগ করে অন্য পাড়ায় মায়ের বসবাস। তিনি হয়তো আমাদের এই জগতের মোহনমায়ার প্রতি যে ব্যস্ত থাকার নিয়ত আগ্রাসী চলন তা পছন্দ করছেন না। কারণ বরই আগ্রাসী। মুখে যতই বলি মায়ের স্মৃতি বহন ও বপন করে যাচ্ছি। কিন্তু আদতে তা নয়। বরং জীবনের অধ্য বয়সে এসে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়েই কেটে যাচ্ছে সময়। তবু কখনো কখনো মায়ের স্মৃতি আমাদের জীবনের চলতি সময়কে অস্থির করে তোলে। তখন মায়ের মতো আশ্রয় যে কেউ ছিল না সেটাই মনে হয়। মা আমাদের পরিবারের সবাইকে আগলে রেখেছেন পরম যত্নে। শুনেছি পরিবারে সন্তানের সংখ্যা বেশি হলে অনাদর-অবহেলায় বেড়ে ওঠে সন্তানাদি। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। আমাদের মা আমাদের নিজের মতো করেই বড় করতে চেয়েছেন। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া আভিজাত্য বা অর্থের ঝনঝনানি থেকে রেখেছেন সুন্দর ও স্বাভাবিক পথে। যে পথে থাকে মানুষের প্রতি মানুষের সম্মান ও শ্রদ্ধা। যে পথে থাকে শিল্পের নান্দনিক ছোঁয়া। এই ক্ষেত্রটি সব সময় না হলেও আমাকে পোড়ায়। অন্যদিকে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধায় নত করে। তিনি কখনোই অর্থের বৈভবে অহংকারী ছিলেন না। ছিলেন সহজ ও সরল পথের অনুসন্ধানী মানুষ। তবে বুদ্ধিমতী। মায়ের কাছে পাওয়া এই গুণটি সব সময় আমল করতে চেষ্টা করি। এই চেষ্টার পথ অবারিত সুন্দরের দিকে হেঁটে গেছে। মা তোমাকে ভালোবাসা। তোমার স্মৃতি বহন করে আমরা যেন আমাদের আগামী প্রজন্মকে জানান দিতে পারি। যেন জানাতে পারি মায়ের মধ্যে তুমি অন্যরকম। মহিলাদের মধ্যে তুমি স্বতন্ত্র একজন।
‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা’ হে আল্লাহ্ দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়া সব মা-বাবাদের জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন, আর? যারা এখনো জীবিত আছেন তাদের হেফাজত করুন... আমিন।
লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক
"