কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
টিভি-ফ্রিজ মেরামতের কথা বলে শিশু অপহরণ
ফ্রিজ-টিভি মেরামতের কথা বলে তিন মাসের একটি শিশুটিকে অপহরণ করে ইলেক্ট্রিশিয়ান সুমন। এরপর শিশুটির বাবা-মায়ের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সে। গত বুধবার রাজধানীর কেরানীগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। তবে র্যাবের তৎপরতায় পরের দিন বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জ থেকে শিশু শিনকে উদ্ধার এবং সুমনকে আটক করা হয়। গতকাল শুক্রবার কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার জাহাঙ্গীর হোসাইন মাতাব্বর এসব তথ্য জানান।
র্যাব জানায় অপহরণকারী সুমন টিভি-ফ্রিজ মেরামতের কাজ করে। কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় তার একটি দোকানও আছে। সেই সূত্রে জিনজিরার মেডিক্যাল প্রমোশন অফিসার শাখাওয়াত হোসেন ও তার পরিবারের সঙ্গে পরিচয়। ১৭ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাখাওয়াতের বাসায় যায় সুমন। এ সময় শাখাওয়াতের স্ত্রী রিতু ইসলাম মিতুকে জিজ্ঞেস করে কোনো কাজ আছে কি না? কোনো কাজ নেই জানিয়ে সুমনকে বসতে বলে মিতু পাশের রুমে বাচ্চার কাপড় আনতে যান। ড্রয়িং রুমের খাটের ওপর তিন মাসের সন্তানটি ছিল। ফিরে গিয়ে দেখেন সন্তান ও ইলেকট্রিশিয়ান সুমন নেই। এরপর সুমনকে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর মুক্তিপণ চেয়ে সুমন ফোন করে। র্যাব ১০ এর সিও এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সুমন মিতুর মোবাইলে ফোন করে বলে, ‘আমি তোর মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছি। মেয়েকে ফেরত পেতে চাইলে দুই লাখ টাকা রেডি রাখ। যখন বলব নিয়ে আসবি। র্যাব-পুলিশ কাউকে জানালে তোর মেয়েকে পাবি না। এরপরই সে ফোন কেটে দেয়। রাত ১১টার দিকে সুমন আবার ফোন করে তাড়াতাড়ি টাকার ব্যবস্থা করতে বলে।’
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে আবার ফোন করে শিশু সুস্থ আছে জানিয়ে কখন কোথায় টাকা নিয়ে আসতে হবে জানায়। একই সঙ্গে পুলিশকে জানালে মেয়েকে হারাতে হবে বলে হুমকি দেয় সুমন। এদিকে, কোনো উপায় না দেখে শাখাওয়াত হোসেন র্যাব-১০ কে বিষয়টি জানায়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ মে বিকেল ৪টা থেকে অভিযান শুরু হয়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার গোলাম বাজার কাঁচাবাজারের পাশে লাকড়ি ঘরের কাছ থেকে অপহরণকারী সুমনকে গ্রেফতার করে। সুমনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোলাম বাজার হাবিব কলোনি গলির দোতলা একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারী সুমন শিশুটিকে অপহরণ ও দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির কথা স্বীকার করেছে। সে আরো জানায়, অপহরণের কাজটি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে করেছে। অপহরণের পর তার পূর্ব পরিচিত পারভেজের বাসায় শিশুটিকে নিয়ে যায় এবং তাদেরকে জানায় শিশুটির মা নেই। শিশুটিকে সে দত্তক নিয়েছে। ১৯ মে তার বোন মাদারীপুর থেকে এসে সেখানে নিয়ে যাবে। এরই মধ্যে র্যাব তাকে গ্রেফতার করে।
"