প্র্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পাকিস্তানে সরকার গঠন জটিলতায় আটকা

* বারবার সিদ্ধান্ত বদল * পিপিপির সঙ্গে আলোচনা করবে পিটিআই * প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী ওমর আইয়ুব

পাকিস্তানে সরকার গঠনে ১৩ দিন বাকি থাকলেও জটিলতা কাটছে না। এই ইস্যুতে কোনো দলই এ পর্যন্ত এক হতে পারছে না। দলগুলো দু-এক দিন পরপর তাদের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনছে। ফলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে দেশটিতে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। তবে সরকার গঠনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পিএমএল-এন এবং পিপিপি তাদের সংসদীয় অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দলে ভেড়ানোর জোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে।

এত দিন মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) কেন্দ্রে জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে পিপলস পাটিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গড়ার চেষ্টা করছে। যদিও এ পর্যন্ত কোনো দলই সরকার গঠনের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি।

এদিকে, পিপিপির সঙ্গে জোট সরকারের আলোচনা নাকচ করে দিলেও ইমরান খান সেই সুর বদলেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দলীয় একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সূত্র বলছে, কারাবন্দি ইমরান খান সরকার গঠনে পিপিপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে ‘প্রস্তুত’। দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া হবে। সরকার গঠন নিয়ে পিটিআই ও পিপিপির মধ্যে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মহাসচিব ওমর আইয়ুব হবেন প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রার্থী। বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে কথা বলার পর দলটির নেতা আসাদ কায়সার এ ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে ভোটের ফল ও নানা জটিল সমীকরণ মিলিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলীম লীগ-পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিএমএল-এন বলছে, দলীয় প্রধান নওয়াজ শরিফ নয়, এই সরকারের প্রধান হিসেবে থাকবে তার ভাই শাহবাজ শরিফ। বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি বলেছে, তাদের এই চুক্তি নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এনকে সরকার গঠনে সহযোগিতা করবে। তবে তারা কোনো মন্ত্রিত্ব পদ নেবে না।

অন্যদিকে, জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামণ্ডফজল, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামি এবং অন্যান্য জাতীয়তাবাদী দলগুলোর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনার পরিকল্পনা করেছে পিটিআই। এসব রাজনৈতিক দল দেশটিতে নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।

পিটিআইয়ের নেতা আসাদ কায়সার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপির ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভণ্ডপ্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে পিটিআই। আমরা সবাই একটি কৌশল তৈরি করতে চাই। কারণ জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করা হয়েছে। এবারের এই নির্বাচন আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জালিয়াতির নির্বাচন। এই নির্বাচনে ‘বিশ্বাসযোগ্যতার’ ব্যাপক ঘাটতি ছিল।

দেশটির সংবিধানে বলা আছে, রাজনৈতিক দলগুলো আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি অথবা নির্বাচনের দিন থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে। দেশটির জাতীয় পরিষদে ৩৩৬টি আসন রয়েছে। যার মধ্যে ২৬৬টি আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় পরিষদে ৭০টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৬০টি নারীদের এবং ১০টি অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত। জাতীয় পরিষদে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান অনুযায়ী এসব আসন বণ্টন করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close