প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

বিস্তৃত হবে শৈত্যপ্রবাহ

দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, সেটি আরো বিস্তৃত হওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ শৈত্যপ্রবাহ আরো দুদিন অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান। সেইসঙ্গে বাড়বে সারা দেশে শীতের অনুভূতি।

গতকাল শনিবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, সেটা বিস্তার লাভ করতে পারে। এদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বনিম্ন ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে। এ সময় দিনাজপুর ও রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৮ এবং নওগাঁর বদলগাছীতে রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। ঢাকায় সর্বনিম্ন ১৩.৮ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখা গেছে।

শনিবার সকাল ৯টার পূর্বাভাসে বলা হয়, আজ রবিবার সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপামাত্রা সামান্য কমতে পারে। আগামীকাল সোমবার রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপামাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে। সোমবার পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোনো কোনো এলাকায় তা দুপুর পর্যন্ত গড়াতে পারে। ঘন কুয়াশায় বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে। চলতি বছরের শুরু থেকেই শীতের দাপট ছিল। ১১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চল ঘন কুয়াশার সঙ্গে থাকে উত্তরের হিমেল বাতাস।

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এদিকে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। ঘর থেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছেন না। পাশাপাশি ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে রয়েছে চারপাশ। বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন চা-বাগানের শ্রমিক, হাওর এলাকার মানুষ ও ছিন্নমূল ও দিনমজুররা। অনেকে খড়খুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

মৌলভীবাজারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ জানান, ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষকের চারা গাছগুলো পাতলা পলিথিন দিয়ে প্রতি রাতে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে কনকনে শীতে দুই সপ্তাহে উপজেলায় শিশু ডায়রিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে জ্বর, সর্দি ও কাশি। শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ভূরুঙ্গামারী সদর হাসপাতালে শিশু ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. রাজু মিয়া জানান, ‘গত শুক্রবার হাসপাতালে ২৩ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ২১ জন শিশু। শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ৬ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শীতে শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। গরম কাপড় পরাতে হবে। ঘরের বাইরে রাখা যাবে না।’ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘হাসপাতালে ওষুধ ও স্যালাইনের কোনো সংকট নেই।’ আমাদের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি আবদুল বাছেদ বাচ্চু ও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী প্রতিনিধি মো. মনিরুজ্জামান এ রিপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close