নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪

ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা

দেশে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এ ভাইরাসের অমিক্রন ধরনের উপধরন জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, ৫ ব্যক্তির শরীরের নমুনা পরীক্ষায় জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেছেন, ৫টি নমুনায় অমিক্রনের উপধরন জেএন.১ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার পর এ উপধরন শনাক্ত হয়েছে।

এদিকে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৮ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮৯ জনে। তবে করোনা আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৭৯ জনের। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৪ হাজার ১২৭ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬৬টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৩৮ হাজার ৭৯৫টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত ৪.৯২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত ১৩.০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতা ৯৮.৪১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু ১.৪৪ শতাংশ। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, করোনার অমিক্রন ধরনের জেএন.১ উপধরন বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে। ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে করোনার এ ধরনটি পাওয়া গেছে। শীতকালে করোনা এবং অন্য সংক্রমণগুলোর প্রকোপ বাড়তে পারে। উত্তর গোলার্ধে এরই মধ্যে আরএসভির মতো বিভিন্ন শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস এবং শিশুদের নিউমোনিয়ার হার বাড়তে দেখা গেছে। করোনার জন্য দায়ী ভাইরাসটি শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে রূপ পাল্টেছে।

এর কয়েকটি ধরনও তৈরি হয়েছে। মাঝে কিছুদিন বিশ্বজুড়ে অমিক্রন ধরনের আধিপত্য দেখা গিয়েছিল। তবে এ ধরনটির সংক্রমণজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি কম এবং বিদ্যমান টিকাগুলোই এ থেকে মানুষকে সুরক্ষা দেবে। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো- জনাকীর্ণ ও বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরতে হবে। কাশি বা হাঁচির সময় নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে হবে। করোনা এবং টিকার নতুন নতুন তথ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে হবে। বিশেষ করে যারা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন। অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকুন। লক্ষণ দেখা দিলে রোগ শনাক্তের পরীক্ষা করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স বিভাগের সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের প্রথম, দ্বিতীয় এবং বুস্টার ডোজ (তৃতীয়, চতুর্থ ডোজ) বিতরণ এবং প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সি জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সি জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব) জনগোষ্ঠী ও গর্ভবতী নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা শহরের ৮টি কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ অর্থাৎ তৃতীয় এবং চুতুর্থ ডোজ ফাইজার ভিসিভি ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।

কেন্দ্রগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়া সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল। পরে ধাপে ধাপে ঢাকার বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও সরকারি হাসপাতাল, ঢাকার বাইরের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো ভ্যাকসিন বিতরণের মাধ্যমে করোনা টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close