আজ লড়াই হবে সমানে-সমান
সেমিফাইনালে আসলে সেরা দলগুলোই আসে। এখানে কাউকে এগিয়ে রাখা যায় না। নির্দিষ্ট দিনে যে কেউ জিততে পারে। ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। ফ্রান্স খুব ভালো ফুটবল খেলে সেমিফাইনালে এসেছে। বেলজিয়ামও খুব ভালো ফুটবল খেলেছে। ব্রাজিলের মতো দলকে হারিয়ে শেষ চারে এসেছে। আজকের ম্যাচে যে কেউ জিততে পারে।
অবশ্য বেলজিয়ামের চেয়ে ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাস সমৃদ্ধ। ইউরোপের দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ী দেশের তালিকায় ফ্রান্সের নাম থাকা উচিত ছিল। তারা বেশ কয়েকবার সেমিফাইনাল খেলেলেও ফাইনাল খেলেছে মাত্র দুইবার। ১৯৯৮ সালে একবারই জিতেছে। ২০০৬ সালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরেছে। এবার তাদের দলটি তরুণ খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গড়া। বিশ্বকাপ জয়ী দিদিয়ের দেশম আছেন কোচের দায়িত্বে। গ্রিজমান, এমবাপ্পে, দেম্বেলে, উমতিতি, জিরুড, ভারানেদের সমন্বয়ে দুর্দান্ত একটি দল ফ্রান্স। পরিপূর্ণ প্যাকেজ। তাদের ফরোয়ার্ড লাইন খুবই শক্তিশালী। মিডফিল্ডও। রক্ষণভাগ বিশ্বের অন্যতম সেরা। আর্জেন্টিনার মতো দলের বিপক্ষে তারা আগ্রাসী ফুটবল খেলে জয় পেয়েছে। আজকের ম্যাচেও তারা তেমন কিছুই করতে চাইবে। বেলজিয়ামকে ভড়কে গিয়ে এগিয়ে যেতে চাইবে শুরুতেই। জিরুড হয়তো গোল পাচ্ছেন না। কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে তিনি জ্বলে উঠতে পারেন। তিনি দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। জিরুড গোল না পেলেও দলের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। হয়তো আজকের ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারে। এমবাপ্পে আর্জেন্টিনার ম্যাচের পর আর গোল পায়নি। সেও জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় আছে। গ্রিমান গোল পাচ্ছেন। দারুণ ছন্দে আছেন। আজ তারা নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেললে এক যুগ পর আবার ফাইনালে উঠতে পারে।
তবে তাদের জন্য কাজটা সহজ হবে না। বেলজিয়াম তাদের সোনালি প্রজন্মের খেলোয়াড়দের ওপর ভর করে সেরা সময় পার করছে। ইডেন হ্যাজার্ড, রোমেলু লুকাকু, ভিনসেন্ট কোম্পানি ও ফেলিয়ানিদের পারফরম্যান্সে ভর করে তারা রীতিমতো উড়ছে। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে তারা দারুণ ছন্দে আছে। তাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। বেলজিয়ামেরও আক্রমণভাগ শক্তিশালী। পাল্টা আক্রমণে গোল দিতে পটু তারা। রক্ষণভাগও শক্তিশালী। মিডফিল্ড শক্তিশালী। ব্রাজিলের মতো দল বেলজিয়ামের রক্ষণভাগ ভাঙতে হিমশিম খেয়েছে। তাদের গোলরক্ষক কোর্তোয়া তো অতিমানবীয় খেলা খেলছেন। ব্রাজিলের বিপক্ষে তিনি ৯টি শট ফিরিয়ে দিয়েছেন! আজকের ম্যাচেও যদি তিনি সেভাবে খেলেন তবে ফ্রান্সের জন্য খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। তবে যারা প্রাপ্ত সুযোগগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারবে তাদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
এই পর্যায়ের ম্যাচগুলো সাধারণত অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। গড়াতে পারে টাইব্রেকারেও। টাইব্রেকারে গেলে আসলে কে জিতবে সেটা বলা আরো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ভাগ্য পরীক্ষায় যে কেউ জিততে পারে।
"