উপল মাহমুদ
হিন্দি চলচ্চিত্রের ‘সুপারস্টার’
‘সুপারস্টার’ এই বিশেষণটি চলচ্চিত্রের নায়কদের নামের আগে যেভাবে জুড়ে দেওয়া হয়, ততটাই দূরে রাখা হয় নায়িকাদের বেলায়। দীর্ঘদিন ধরেই এই অঘোষিত প্রথাটি উপমহাদেশের চলচ্চিত্রে জেঁকে বসেছিল। কিন্তু আশির দশকে বলিউডে শ্রীদেবীর উত্থানে সবকিছু যেন দুমড়ে-মুচড়ে যায়। মায়াবী ডাগর চোখ, সুডৌল মুখমÐল। শিফন শাড়ি আর লম্বা বেণিতে এক পার্থিব সৌন্দর্যের প্রতিভ‚ হয়ে ওঠেন শ্রীদেবী। তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডি সিনেমাজগতের সুপার স্টার। হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে একসময় ছিল মধুবালা, বৈজয়ন্তীমালা, মীনা কুমারী, নার্গিস, শর্মিলা ঠাকুর, জয়া ভাদুরী, হেমা মালিনী, রেখার দোর্দÐ প্রতাপ। পরে হিন্দি চলচ্চিত্র নতুন দিকে মোড় নিতে শুরু করে। সিনেমার কাহিনির ধরনও পাল্টে যাচ্ছিল। উঠতি লগ্নিকারকরা সিনেমার জগৎটাকে নতুন খাতের দিকে টানছিলেন। হিন্দি চলচ্চিত্রের এই যুগটাকে অনেকে সৃজনশীলতার ঘাটতির সময় হিসেবে দেখেন। আসলেই এই সময় দাগ কাটার মতো ছবি খুব কমই তৈরি হয়েছে। নিষ্প্রভ এই সময়কালে পর্দার প্রাণময়তা ধরে রেখেছিলেন শ্রীদেবী। নৃত্যকলায় পারদর্শী এক গø্যামার গার্লের ইমেজের মধ্যে সীমিত ছিলেন না তিনি। বিচিত্র ধরনের চরিত্রে ছিলেন সাবলীল। ১৯৮৩ সালের সাদমার স্মৃতি হারানো আলাভোলা দুষ্টু তরুণীর সঙ্গে পরের বছরের তোফা ছবির ললিতাকে মেলানো কঠিন। নাগিনা, চালবাজ আর লামহেতেও যেন তিনটি আলাদা শ্রীদেবী হাজির হন। প্রায় এক দশকজুড়ে হিন্দি চলচ্চিত্রে সৌন্দর্যের সমার্থক ছিলেন শ্রীদেবী। আর কোনো নায়িকাকে এত দীর্ঘ সময় জুড়ে প্রভাব বলয় অক্ষুণœ রাখতে দেখা যায়নি। দীর্ঘ বিরতির পর শ্রীদেবীর অভিনয় জীবনের দ্বিতীয় পর্ব কেবল শুরু হয়েছিল। তার অকালবিদায় উপমহাদেশের সিনেমা দর্শকদের বঞ্চিত করল।
"