সঞ্জয় সুত্রধর, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

  ৩১ মার্চ, ২০২৪

পাটুরিয়া ঘাটে ভোগান্তির শঙ্কা নেই

বেশি দিন আগের কথা নয়। মাত্র বছর দু-এক আগে, পদ্মা সেতু চালু পূর্বে পাটুরিয়া-আরিচা ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঈদে এতটাই চাপ বেড়ে যেত যে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি নিয়ে গণমাধ্যমে নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করতে হতো। সব ঘাটেই দেখা যেত যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ফেরির সিরিয়াল পাওয়ার জন্য যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হতো, কখনো কখনো এই অপেক্ষা দিন গড়িয়ে রাত হয়ে যেত। শিশু নারী ও বয়স্ক যাত্রীর ভোগান্তির সীমা থাকত না। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার রাজধানীর প্রধান প্রবেশ পথ ছিল এই নৌরুট। আর দিন পাল্টে গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া-আরিচা ঘাটে নেই সেই ভিড়। নেই সেই প্রাণচাঞ্চল্য আর ভোগান্তি। তাই এবার ঈদে ঘরমুখো মানুষের কোনো দুর্ভোগের আশঙ্কা নেই।

২০২২ সালের ২৬ জুনে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব যানবাহন সে পথই বেছে নিয়েছে আর সেই সঙ্গে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের গুরুত্ব অনেক কমে গেছে। ফেরিতে যানবাহন কম পারাপার হওয়ায় ঘাট এলাকায় আর যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে না। ঘাটে আসা মাত্রই সরাসরি ফেরির সিরিয়াল পাচ্ছে যানবাহন। আগের মতো ঘাটে এসে নদী পারাপার হওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অফিস সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু হওয়ার আগে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার যাত্রী ও যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটের ফেরিতে পারাপার হতো। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে ঈদের সময় গড়ে প্রতিদিন ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার যানবাহন পারাপার করতে হয়েছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর গত বছর প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে। গত বছর ঈদের সময় বিআইডব্লিউটিসির কর্তৃপক্ষ ছোট-বড় ১৯টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করেছে। এবার ঈদে এ নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইডব্লিউটিসির কর্তৃপক্ষ। এ কারণে এবারও ঈদে দুর্ভোগ হবে না। এ নৌ-রুটে ফেরি চলাচলের জন্য নাব্যতাও স্বাভাবিক রয়েছে।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম খান জানান, এ নৌ-রুটে ২১টি লঞ্চ দিয়ে কাটা লাইনের যাত্রীদের পারাপার করা হবে। আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে গত বছর ঈদের সময় ফেরি স্বল্পতার কারণে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ঘাট এলাকায় এসে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তবে এবারও ঈদের সময় পাঁচটি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন করা হবে। এ কারণে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ১২ লঞ্চ ও স্পিডবোট দিয়ে যাত্রী পারাপার হবে। আরিচা ঘাটে ঈদে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকলে বাড়তি ভাড়া নিয়ে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করত। এতে নৌ-দুর্ঘটার ঝুঁকি তৈরি হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অফিসের ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ বলেন, এবার ঈদে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি ও আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে পাঁচ ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এবার ঈদে ঘাট এলাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। পাটুরিয়ায় পাঁচটি ঘাটের মধ্যে চারটি ঘাট সচল রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close