নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ জানুয়ারি, ২০২৪

আমাদের রিজার্ভ ভালো অবস্থায় আছে

- অর্থমন্ত্রী

‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আমাদের অর্থনীতির প্রাণবিন্দু। অন্য দেশের তুলনায় আমাদের রিজার্ভ ভালো অবস্থায় আছে। তবে আইএমএফ যে টার্গেট দিয়েছে, সেটা কখনো পূরণ করা যাবে বা কখনো পূরণ সম্ভব নয়।’ গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে আমরা রিফর্ম এনেছি। এ রিফর্মের কারণে এখনো জীবিত আছি আমরা। যদি আমাদের সুদহার ৬ থেকে ৯ শতাংশ না থাকত... যদি সুদহার আগের মতো ২২ থেকে ২৪ শতাংশ রাখতাম, তাহলে এতদিন আমরা কোথায় চলে যেতাম, হারিয়ে যেতাম। দেশের অর্থনীতি হারিয়ে যেত, দেশের মানুষ হারিয়ে যেত। কিন্তু আজ আমরা সেই কাজটি করতে দিইনি। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন এটা সম্ভব।

ভবিষ্যতে মূল চ্যালেঞ্জ অর্থনীতি, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য সঠিক জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে চিন্তা করেন, আমরাও একই চিন্তা করি। আমাদের আলাপ-আলোচনা হয়। অর্থনীতি দুর্বল হলে সরকার কীভাবে টিকে থাকবে? আর দেশ কীভাবে এগিয়ে যাবে? আমি এখনো বলি, আমরা ভালো অবস্থানে আছি। সুদহার বাড়ানো প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুদহার বাড়ছে, যদি এটা অ্যাকুমুলেট (জমানো) করতে পারে, হোয়াই নট। আমরা অ্যাকুমুলেট করতে পারতাম না, আমাদের ছোট ব্যবসায়ীরা, মাঝারি উদ্যোক্তারা; এমনকি বড় উদ্যোক্তারা সব ছিল। আমরা সেগুলোকে রক্ষা করেছি। পরে আমাদের খেলাপি ঋণ বাড়তে যাচ্ছিল। খেলাপি ঋণ যাতে না বাড়ে, সেজন্য আমরা এটাকে বাস্তব অবস্থায় নিয়ে এলাম। তিনি বলেন, আমরা সময় বাড়িয়ে খেলাপি হতে দিইনি। দু-একটা ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক লেনদেন লক্ষ করেছি। সেগুলো এবার থাকবে না, ইনশাআল্লাহ।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতির যে এলাকা রয়েছে, তা আপন মহিমায় উপরে উঠেছে। সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের অর্থনীতি, ৪১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা, তা অর্জন করতে পারব। আমরা বিশ্বাস করি, ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের ২০টি উন্নত দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ যা বলে, তা তাদের শিখিয়ে দেওয়া হয় না। গবেষণার মাধ্যমে তারা করে। পৃথিবীর যেসব দেশ ঋণ নিচ্ছে, তাদের মধ্যে আমাদের জিডিপি ৩৪ শতাংশ, যা পৃথিবীর মধ্যে সর্বনিম্ন। সিপিডির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যখন ক্ষমতা নিই, তখন তারা আমাদের বারবার বলেছিল, টাকার অবমূল্যায়ন করে দিতে। তা না করলে ১ ঘণ্টাও টিকতে পারব না। আমরা তো টিকে আছি। বাজারে গেলে জিনিসপত্র কেনা যাচ্ছে। যারা বিক্রি করছে, তাদের কিছু তো ফেরতও আসে না।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, অর্থনীতি চালাতে গেলে অর্থনীতির জন্য মূল্যস্ফীতির প্রয়োজন আছে। যারা অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা করে না, তারা বলতে পারে মূল্যস্ফীতির প্রয়োজন নেই। মূল্যস্ফীতি ছাড়া অর্থনীতি চলতে পারে না। কয়েকদিন আমরা ৮ থেকে ১০ বছরের মতো মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেছি। এর চেয়ে ভালো নম্বর আর হতে পারে না। অর্থনীতি নিয়ে নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ কী- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সামনের সরকার আসুক, তখন সেটা বলা যাবে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত বলেছেন, আগামীতে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে অর্থনীতি, আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী রাখতে হবে। গতিশীল রাখতে হবে, কোনোভাবেই যাতে পথ না হারায়, এটাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামীতে অর্থনীতিই হলো মূল চ্যালেঞ্জ- এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, ঠিক বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে চিন্তা করেন, আমরাও একই চিন্তা করি?। আমাদের আলাপ আলোচনা হয়। অর্থনীতি দুর্বল হলে সরকার কীভাবে টিকে থাকবে, আর দেশ কীভাবে এগিয়ে যাবে? আমি এখনো বলি, আমরা ভালো অবস্থানে আছি। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা যদি আসে, তাহলে তো তৈরি পোশাক খাতে প্রভাব পড়বে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জোর করে কেউ কিছু করলে আমরা কি কিছু করতে পারি? কোনো অপরাধ করলে শাস্তি আছে। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো অপরাধ করেনি। অপরাধ করলে ধরা পড়ত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close