মাওলানা মাসউদুল কাদির

  ১৩ মার্চ, ২০২৪

বরকত আভায় সিক্ত হোক রোজার জীবন

প্রতীকী ছবি

আজ সাওমের দ্বিতীয় দিন। বরকতের পুণ্যময় বারিধারা মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করে তুলছে। আল্লাহর রহমতস্নাত এই মাসে জীবন আলোকময় করা অতি সহজ। কারণ, রোজার প্রতিদান মহান আল্লাহ নিজেই দান করবেন। বিশুদ্ধতম হাদিসগ্রন্থ বোখারি শরিফে উঠে এসেছে, আল্লাহতায়ালা বলেন, মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য হয়ে থাকে, কিন্তু সিয়াম শুধু আমার জন্য। আমিই তার প্রতিদান দেব। সে তার প্রবৃদ্ধি ও পানাহার আমার জন্যই ত্যাগ করে। (বোখারি ও মুসলিম)

বরকতময় এই মাসের জন্য মুমিনেরা সুতীব্র আশায় ছিলেন, আবেগে ও ভালোবাসায় আমলের আকাঙ্ক্ষা ও বাসনায় ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদানা’ উচ্চারিত হচ্ছিল মুমিনের মুখে মুখে। আবেগঘন এক ভালোবাসার পঙ্ক্তিমালা। হে আল্লাহ! আপনি হায়াতে রমজান পর্যন্ত বরকত দান করুন। আমরা যারা বেঁচে আছি, মহান আল্লাহর রহমতে সিয়ামকে পেয়েছি। আল্লাহর অনেক বড় মেহেরবানি।

আমরা জানি, রোজায় আল্লাহর অবারিত রহমতে ছেয়ে যায় গোটা দুনিয়া। মানুষ নিজেকে অতীব সুন্দরতম করে গড়ে তুলতে একটা নিয়মিত তারবিয়াতে, প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। সিয়ামের সাহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত প্রতিটি আমলই প্রশিক্ষণের। প্রশিক্ষিত বান্দা যেন হররোজ ভালো থাকে, আমলে আখলাকে। এক মাসের প্রশিক্ষণে পরের ১১ মাস যেন নিজেকে সামলে চলতে পারে। অপরাধের পথ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে পারে।

রহমতের ১০ দিনের শুরুতেই সমাজে রহমতের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সচক্ষে দেখা যায়। কী পরিমাণ পরিবর্তন হয়েছে রহমতের আবহে গোটা সমাজ। মানুষ সবকিছুতে সংযত, সংযমী হয়। বেচাকেনায়, কথা বলায়, চলাফেরায়- ফলে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রহমতের ধারা প্রবাহিত হয়। রহমতের অনন্য বরকত ছড়িয়ে পড়ে।

রোজার প্রতিদান সরাসরি মহান আল্লাহ দেবেন বলে মানুষের আগ্রহও এর প্রতি অনেক। এক হাদিসে আছে, হজরত সাহল ইবন সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজী (সা.) বলেছেন, বেহেশতে আটটি দরজা রয়েছে। তন্মধ্যে একটি দরজার নাম ‘রাইয়ান’। রোজাদাররা ছাড়া ওই দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করত পারবে না। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)

রমজানের আবহ এরই মধ্যে আমাদের মন আলোকিত করে তুলেছে। রহমতের এই আভা মন রাঙিয়ে রাখে আজীবন। মাগফিরাত সত্যিই যেন গ্রহণ করতে পারি। মুক্তির সনদ পেয়ে আখেরাতের সব কল্যাণে যেন আমরা বরিত হই। রমজানের সাধনায় জীবন হয়ে উঠুক বরকত ও রহমতে পরিপূর্ণ। রোজার প্রতিটি ক্ষণ বা মুহূর্তই পুণ্যময়, বরকতময়। পুণ্য ছাড়া কোনো মুহূর্ত নেই। সাহরি, সালাত, কোরআন তেলাওয়াত, ইফতার, তারাবি, কিয়ামুল লাইলসহ নানা রকম পুণ্যময় আমলে ডুবে থাকে মুমিন। এজন্যই মাহে রমজানকে বলা হয় পুণ্য ও বরকতের আধার।

লেখক : প্রিন্সিপাল, মাদরাসাতু ইকরা দারুল উলুম হবিগঞ্জ [email protected]

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রমজান,রোজা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close