প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
বিশ্ব আয়োডিন দিবস পালিত
২৭ বছরে আয়োডিন অভাবজনিত সমস্যা কমেছে ৪৪ শতাংশ
দেশে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার গত ২৭ বছরে কমেছে ৪৪ শতাংশ। আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন কার্যক্রমের শুরুর দিকে, ১৯৯৩ সালে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার ছিল ৬৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। বিসিকের এ কার্যক্রমের ফলে ২০১৯-২০ পর্যন্ত আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
বিশ্ব আয়োডিন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই তথ্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) আয়োজনে আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত বিসিক ভবনে এই অনুষ্ঠান হয়। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
- আরো ১৪ শতাংশ মানুষ আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করলে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে দেশ
- আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ
- দেশে বর্তমানে ৭৬ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করছে
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিক চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দীন আহাম্মদ খান। বিসিকের পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মো. আহসান কবীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিসিকের পরিচালক (অর্থ) মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস, পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী, পরিচালক (দক্ষতা ও প্রযুক্তি) কাজী মাহাবুবুর রশিদ, পরিচালক (প্রকৌশল ও প্রকল্প বাস্তবায়ন) মো. আব্দুল মতিন, পরিচালক (বিপণন, নকশা ও কারুশিল্প) খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, এনআই-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর সায়কা সিরাজ ও গেইনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার।
দেশে অনুপুষ্টির অভাবজনিত সমস্যাগুলোর মধ্যে আয়োডিন ঘাটতিজনিত সমস্যা অন্যতম। আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড, হাবাগোবা, বামনত্ব, অকাল গর্ভপাত, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধিত্বসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা নিরসন ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ২১ অক্টোবর বিভিন্ন দেশে বিশ্ব আয়োডিন দিবস উদযাপিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে গতকাল সোমবার দিবস উদযাপিত হয়েছে। এতে সহায়তা করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল (এনআই) ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (জিএআইএন)।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বিসিকের আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন কার্যক্রমের ফলে ২০১৯-২০ পর্যন্ত আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বর্তমানে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার হার আরো কমে গেছে। কোনো দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করলে সেই দেশ আন্তর্জাতিকভাবে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। সেই স্বীকৃতি পেতে বাংলাদেশের আর বেশি দেরি নেই। আর মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষকে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের আওতায় আনা গেলেই এই স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হবে। এজন্য দেশের মানুষকে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের আওতায় নিয়ে আসতে সচেতনতা আরো বৃদ্ধি প্রয়োজন বলে জানিছেন বক্তারা।
বিসিকের কার্যক্রম তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ৯০ দশকের আগে দেশে আয়োডিন ঘাটতিজনিত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছিল। এ সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার ১৯৯০ সাল থেকে বিসিকের মাধ্যমে সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর অংশ হিসেবে লবণ মিলের নিবন্ধন দান, মিলগুলোকে পটাশিয়াম আয়োডেট সরবরাহ, আয়োডিনযুক্ত লবণের মান নিয়ন্ত্রণ ও কারিগরি সহায়তা দান, লবণমিল ও বাজার পর্যায়ে তদারকি এবং আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়। এতে দেশে বর্তমানে ৭৬ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করছে। বর্তমানে দৃশ্যমান গলগণ্ড নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আয়োডিনের গুরুত্বের ওপর উপস্থাপনা করেন প্রফেসর সৈয়দা আফরোজ জাহান মৌসুমী। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিকের লবণ সেল প্রধান সরোয়ার হোসেন। বিসিকের উপব্যবস্থাপক (উপকরণ) তারানা জাহান তানিয়া ও নকশাবিদ শেখ আলী আশরাফ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, লবণ মিল মালিক, লবণ ব্যবসায়ী, ভোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।