নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মিরপুরে গৃহকর্মীর সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় অংশীজন সমাবেশ অনুষ্ঠিত

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে গৃহকর্মীর সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় অংশীজন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মিরপুরের বাউনিয়াবাদ ঈদগাহ্ মাঠে সুনীতি প্রকল্পের আওতায় কর্মজীবী নারীদের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মিরপুরের বাউনিয়াবাদ ঈদগাহ্ মাঠে ‘গৃহকর্মীর সুরক্ষা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় অংশীজন সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় এলাকার জনগণকে গৃহকর্মীদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করাই এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য।

মিরপুর গৃহশ্রমিক আঞ্চলিক ফোরামের সভাপতি জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক আবুল হোসাইন, শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল আহসান জুয়েল, গার্হস্থ্য নারীশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদা আখতার, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫নং ওয়ার্ডের সচীব আবু সাইদ চৌধুরী পান্না, বাউনিয়াবাদ কমিউনিটি লিডার জয়নুল আবেদীন, ভাষানটেক থানার সাব ইন্সপেক্টর তপতী বিশ্বাস, ইউসেপ বাংলাদেশের ডেপুটি প্রোগ্রাম অফিসার জুয়েল চন্দ্র সরকার, অক্সফাম বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কন্সালটেন্ট রাজশ্রী গায়েন এবং কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা। মিরপুর গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরামের সদস্যবৃন্দ ও ২০০ জন গৃহশ্রমিকসহ প্রায় ৫০০ জন জনসাধারণের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটিতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফারহানা আফরিন তিথির সঞ্চালনায় আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এ ব্যাপারে বাউনিয়াবাদ এলাকার কমিউনিটি লিডার জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘মিরপুর এলাকার গৃহশ্রমিকদের আরও বেশি করে এই প্রকল্পের আওতায় আনা উচিত, যাতে আরও প্রশিক্ষিত গৃহশ্রমিক তৈরি হয়।’

গার্হস্থ্য নারীশ্রমিকি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুরশিদা আখতার বলেন, ‘শুধু প্রকল্পভিত্তিক নয়, গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজের পরিবেশ তৈরি করার জন্য লড়াই করে যেতে হবে, যাতে প্রকল্প শেষ হলেও অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করা যায়।’

গৃহশ্রমিক সাফিয়া (ভাষানটেক) আখতার এবং গৃহশ্রমিক সাফিয়া বেগন (বেগুনটিলা) সুনীতি প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে তাদের জীবনমান উন্নয়ণ হয়েছে, তাদের বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কর্মস্থলে মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে —এই বিষয়ে তারা অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

আইএলও কনভেনশন ১৮৯ ও শোভন কর্মপরিবেশ ১৯০-তে অনুস্বাক্ষর করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখন সময় এসেছে গৃহশ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার। ২৫ লাখ গৃহশ্রমিক যে দেশে কাজে নিয়োজিত আছে তাদের প্রতি নির্যাতন ও বৈষম্য প্রতিরোধ না করলে তা জাতীর জন্যই হুমকি স্বরূপ হবে।

দুজন নিয়োগকারী আলেয়া আখতার ও নাজনীন বেগম তাদের গৃহে কর্মরত দক্ষ গৃহকর্মীর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এই রকম দক্ষ গৃহকর্মী যে বর্তমান ব্যস্ত জীবনে নাগরিকের জন্য কতটা প্রয়োজন তা তুলে ধরেন।

যে কোনো সমস্যায় গৃহকর্মীরা ভাষানটেক থানায় অভিযোগ করতে পারেন এবং সমস্যা সমাধানে পুলিশ বাহিনী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে জানান ভাষানটেক থানার সাব ইন্সপেক্টর তপতী বিশ্বাস।

সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমজীবী মানুষ গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি করার প্রতি জোড় দিয়ে জনাব আবুল হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘গৃহকর্মীরা শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত হবে সেদিন আর বেশি দেরী নয়, খুব শীগগিরই হয়তো তারা শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবে এবং গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ২৪ বছরের সংগ্রামের অর্জন হবে এবং শোভন কাজের জন্য আইএলও মানদন্ডে যে ৫টি বিষয় আছে তা নিশ্চিত হবে —তবেই গৃহকর্মীরা প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।

সানজিদা সুলতানা, অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক, কর্মজীবী নারী গৃহকর্মীদের ধৈর্য ধরে অধিকার আদায়ের এই লড়াইয়ে থাকার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য যে, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও গ্লোবাল এ্যাফয়ার্স কানাডার আর্থিক সহযোগীতায় ২০২২ সাল থেকে মিরপুর এলাকায় ৪০০০ গৃহকর্মী নিয়ে সুনীতি প্রকল্পের আওতায় জীবন দক্ষতা বিষয়ে গৃহকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সমাবেশ অনুষ্ঠিত,অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা,গৃহকর্মী,মিরপুর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close