নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ জুন, ২০১৭

‘ঋণ সহায়তার’ বাকি অংশ বেশি সুদে নেওয়ার প্রস্তাব

এবার বাংলাদেশকে বেশি সুদে ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চীন সরকার। এর আগে বাংলাদেশে চীনের প্রেসিডেন্টে শি জিনপিংয়ের সফরকালে ঋণ সহায়তার একাংশ জিটুজি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে দিলেও, এবার বাকী অংশ নিতে হবে বাণিজ্যিকভাবে। যে ঋণ নমনীয় সুদে পাওয়ার কথা তা এখন বেশি সুদে নিতে হবে।

সম্প্রতি রাজধানীতে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের এক বৈঠকে চীনা দূতাবাসের ইকোনমিক ও কমার্শিয়াল কাউন্সেলর লি গুয়াংজুন ঋণ সহায়তার কিছু অংশ বাণিজ্যিকভাবে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। চীনের এই প্রস্তাবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আপত্তি জানিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বৈঠকে শেষ পর্যন্ত বাণিজ্যিক ঋণ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। বৈঠক সূত্র জানায়, অল্প কিছু প্রিফারেন্সিয়াল বাইয়ার্স ক্রেডিট (পিবিসি) বা বেশি সুদের ঋণ হতে পারে। আমরা কোন ঋণ কত নেব, তার একটা তালিকা চীনা দূতাবাসে পাঠাব। পিবিসি ঋণের জন্য ৪ শতাংশের বেশি সুদ দিতে হবে এবং ‘গভর্নমেন্ট কনসেশনাল লোন’এর জন্য ২ শতাংশ সুদ দিতে হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, লি গুয়াংজুন বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তাতে সব প্রকল্পই জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে, এমন কোনো প্রতিশ্রুতি চীন দেয়নি।’ এছাড়া আরো জানা গেছে, চুক্তিভুক্ত ৩৪ প্রকল্পে কত ভাগ নমনীয় আর কতভাগ বাণিজ্যিক ঋণে বাস্তবায়িত হবে আর কতভাগ বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে, তার একটি তালিকা ইআরডিকে পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছিল চীনের কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফরকালে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। সরকারি পর্যায়ে দুই সরকার প্রধানের তত্বাবধানে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ওই ঋণ নমনীয় ঋণ হিসেবে ধরা হয়। বিপরীতে বাণিজ্যিক ঋণে সুদের হার হয় বেশি। ফলে বাংলাদেশ সবগুলো প্রকল্পে চীনের কাছ থেকে নমনীয় ঋণের প্রতিশ্রুতি ধরে নিলেও, এখন বেশি সুদে বাকী ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে বেইজিং। বৈঠকে ইআরডির প্রতিনিধি দলের প্রধান ছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহ মোহা. আমিনুল হক। তিনি বলেন, জিটুজি ভিত্তিতে ঋণচুক্তি নমনীয় ঋণ হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া বাণিজ্যিক ঋণের জন্য বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত নয়। চীনের প্রতিনিধিদের তিনি এ কথা পরিষ্কার করে জানিয়েছেন বলেও জানান।

প্রসঙ্গত, চীনা প্রেসিডেন্টের সফরের সময়ে যে ৩৪ প্রকল্পের জন্য ঋণচুক্তি হয়েছিল, তার আটটি অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে ইআরডি। এই আট প্রকল্পের সম্মিলিত ব্যয় ৮৯৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার। এরমধ্যে পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পটিতে সবার আগে অর্থায়নের অনুরোধ জানিয়েছিল ইআরডি। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। অগ্রাধিকারের অন্য প্রকল্পগুলো হল- ‘ইনস্টেলশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্প’, ঢাকা-সিলেট ফোর লেইন হাইওয়ে প্রকল্প, ইনফো সরকার-৩ প্রকল্প, এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রকল্প, পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেংদেনিং প্রজেক্ট আন্ডার পিজিসিবি প্রকল্প, মডার্নাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন্স নেটওয়ার্ক অব ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রকল্প এবং চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন ইন চিটাগাং প্রকল্প।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist