নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

মানবতাবিরোধী অপরাধ

রাজশাহীর টিপু রাজাকারের রায় আজ

ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা রাজশাহীর মো. আবদুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতান ওরফে টিপু রাজাকারের বিরুদ্ধে করা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ের তারিখ আজ বুধবার ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল মঙ্গলবার এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে আসামি টিপু সুলতানের উপস্থিতিতে গত ১৭ অক্টোবর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় রাজশাহীর বোয়ালিয়া এলাকায় নিরীহ মানুষকে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুটতরাজসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এই আসামির বিরুদ্ধে।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে এ মামলায় শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল, জাহিদ ইমাম ও সাবিনা ইয়াসমীন খান মুন্নী। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

প্রসিকিউটর বাদল বলেন, আসামির বিরুদ্ধে দুই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসিকিউশন পক্ষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১৪ জন সাক্ষী দিয়েছেন। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি। এ কারণে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে আসামি পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে শুধু স্থানীয় ও রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে। তাই আমি আমার মক্কেলের খালাস চেয়েছি।

মামলায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, নির্যাতন, আটক, অপহরণ, লুণ্ঠনের অভিযোগ রয়েছে। রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দুজনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করে পাওয়া গেছে। তবে ছয়জনের মধ্যে মনো, মজিবর রহমান, আবদুর রশিদ সরকার, মুসা, আবুল হোসেন আগেই মারা যান। বেঁচে আছেন একমাত্র আসামি আবদুস সাত্তার ওরফে টিপু রাজাকার ওরফে টিপু সুলতান। আসামির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ মামলায় তদন্ত শেষ করে চার ভলিয়মে ৪২০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন। ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি জামায়াতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্রসংঘ’ পরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৪ সালে নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০১১ সালে অবসরে যান।

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালের ১০ আগস্ট এই চিহ্নিত রাজাকারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পান। ১৯৮৪ সালের পর সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় মতিহার থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তী সময়ে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। একই বছরের ২ মে ছাত্রশিবিরের এই সাবেক নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয় তদন্ত সংস্থা। ২৯ মে প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে একই বছরের ৮ আগস্ট অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে টিপু সুলতানের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close