reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে সংসদে জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৮ জনের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন (ইসি) অফিসে জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নির্ধারিত দিন বিকেলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এসব মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের পার্বত্য জেলার আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন রাঙামাটি সদর উপজেলার ১নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা। আলোচনার একেবারেই বাইরে থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন তিনি।

জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৯৮ সালে তিনি একজন কর্মী হিসেবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তারপর ২০১১ সালে রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন ১ নং জীবতলি ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি জীবতলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পান। সেই থেকে এখনো তিনি এই পদে আসীন আছেন। ইউপি সদস্যের মেয়াদ শেষে তিনি কিছুদিন কার্বারির দায়িত্বও পালন করেন।

জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যার জন্ম ১৯৮০ সালে রাঙামাটির দুর্গম বিলাইছড়ি উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম পদ্মমনি তঞ্চঙ্গ্যা ও মায়ের নাম খুঅংপুক তঞ্চঙ্গ্যা। বাবা মায়ের ৬ সন্তানের মধ্যে তিনি ৪র্থ। ১৯৯৬ সালে কাপ্তাই উপজেলার জীবতলি ইউনিয়নের তরুণ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তরুণ কান্তি তঞ্জঙ্গ্যা কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার শ্বশুর যতনী কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য। জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যার শাশুড়ির বোন মালতি রাণী তঞ্চঙ্গ্যা ছিলেন তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠী থেকে সংসদে যাওয়া প্রথম নারী সংরক্ষিত আসনের সদস্য। তিনি এরশাদ সরকারের সময়ে সংসদ সদস্য ছিলেন।

এ বিষয়ে জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, প্রথমত আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি আমাকে চূড়ান্ত তালিকায় স্থান দিয়েছেন। পাশাপাশি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার অভিভাবক সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপিকে। তৃণমূল থেকে আমার মতো একজন কর্মীকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার ভূমিকা অপরিসীম। আমি পাহাড়ের প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করব। রাঙাামাটি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপক বিকাশ চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু পার্বত্য জেলাগুলোতে বিভিন্ন সম্প্রদায় মিলে মোট ১৬টি জাতিসত্তার বসবাস, সেহেতু ইতোপূর্বে চাকমা, মারমা, বাঙালিসহ বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে নারী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আমরা পেয়েছিলাম। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে যেহেতু আজ অব্দি কেউ প্রতিনিধিত্ব করেনি, সেই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল থেকে জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যাকে মনোনীত করেছেন। তাছাড়া তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি নিজেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাই আমি মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যোগ্য ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করেছেন এবং আমাদের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারও তার জন্য সুপারিশ করেছেন। তিনি দলসহ এই পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে আশা রাখি।

ব্যক্তিজীবনে জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় চিত্তরঞ্জন চাকমার হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close