আতিকুর রহমান আজাদ, কালকিনি (মাদারীপুর)
কালকিনিতে দুই স্কুলছাত্রীকে মারধরের জের
দুপক্ষের শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ, দোকানসহ ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর
মাদারীপুরের কালকিনিতে স্কুলছাত্রীকে মারধরের ঘটনার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও শতাধিক হাত বোমা বিস্মরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দোকানসহ ১৫টি বসতঘর ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের কাজী কান্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এতে এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
উপজেলার কাজীকান্দি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে মিরাজ হাওলাদার ও আপাং কাজীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতেই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, মিরাজ হাওলাদারের এলাকার বাসিন্দা হালিম শিকারীর স্কুল পড়ুয়া মেয়ে আফরিন আক্তার (১৩), মাসুদ হাওলাদারের মেয়ে সোনলী আক্তার (১১) সোমবার কালাই সরদারে চর এলাকার জমিতে শাপলা তুলতে গেলে মারধর করে আপাং কাজীর পক্ষের লোকজন। তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কালকিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে সোনালীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
এদিকে ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার রাতে দুপক্ষের লোকজন শতাধিক ককটেল ও হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় আপাং কাজীর দলের লোকমান কাজীর মুদি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট, নাসির মৃধা, সাইদুল, হিরন, জাহাঙ্গীর, কালু, ওবায়দুল, ফিরুজ, এসকেন, ইউনুস মৃধাসহ অন্যদের ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে কালকিনি থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
- আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে মিরাজ হাওলাদার ও আপাং কাজীর বিরোধের জের
- আরেক পক্ষে এলাকায় শাপলা তুলতে গেলে দুই স্কুলছাত্রীকে মারধর
- পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
সংঘর্ষের ব্যাপারে আপাং কাজী বলেন, ‘মিরাজ হাওলাদার, জুয়েল হাওলাদারের লোকজন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। সোমবার রাতে কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে হাত বোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে একটি দোকানসহ ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর করে। আমরা এর সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মিরাজ হাওলাদারের ভগ্নিপতি জুয়েল হাওলাদার বলেন, ‘সোমবার আমাদের এলাকার দুটি ছোট মেয়ে জমিতে শাপলা তুলতে গেলে আপাং কাজীর লোকজন মারধর করে। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত সোনালীর অবস্থা ভালো না, তাকে ঢাকা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রাতে তারা মুর্হূমুহূ হাত বোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই ঘরগুলি আগের ভাঙা।’
জানতে চাইলে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার আবদুল্লাহ মামুন বলেন, ‘সোমবার গভীর রাতে এলাকার দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দোকান সহ কয়েকটি ঘর ভাংচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। এখনও এঘটনায় কোন অভিযোগ হয়নি,অভিযোগ হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।
পিডিএস/আরডি