জাহাঙ্গীর হোসেন, পটুয়াখালী
পটুয়াখালী সদর
মাদরাসার শিশুকে বলৎকারের পর আটকে ভয়ভীতি দেখান শিক্ষকরা
পটুয়াখালীতে মাদরাসার এক শিশুশিক্ষার্থীকে (৮) নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকারের অভিযোগে পাওয়া গেছে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে। এ সময় চিৎকার করায় শিশুকে মারধর করে মাদরাসায় আটকে রাখেন তিনি। পরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুকে চিকিৎসা না দিয়ে উল্টো ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এ ঘটনায় মাদরাসার ওই শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আহম্মদ কবিরের পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শিশুর বাবা। মামলাটি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে ১২টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান শিশুর বাবা। এর আগে চলতি বছরের ৯ জুন পটুয়াখালী শহরের শের-ই-বাংলা সড়কে অবস্থিত দারুল কোরআন মাদরাসায় এই ঘটনা ঘটে। শিশুটি ওই মাদরাসায় প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা শিশুটির বাবা ফরিদপুরে কাঁচামালের ব্যবসা করেন। বর্তমানে শিশুটি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে জানান তার বাবা।
- মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
- কয়েকদিন ধরে মাদরাসায় আসেন না অভিযুক্ত শিক্ষকরা
- অসুস্থ শিশুটি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিশুর বাবা বলেন, ঘটনারদিন বেলা ১১টার দিকে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান মাদরাসার তৃতীয় তলায় তার কক্ষে নিয়ে শিশু ছাত্রকে বলাৎকার করেন। এ সময় শিশুটি কান্না করলে তাকে বেধরক মারধর করে মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে মাদরাসায় আটকে রাখেন তিনি। পরে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লেও মাদরসার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আহম্মদ কবির ও সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান তার কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন নাই। বিষয়টি অভিভাবককে না জানায় নাই জানিয়ে উল্টো কাউকে না বলার জন্য শিশুকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।
এদিকে জুনের ১২ তারিখ থেকে ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়িতে গেলে শিশুটি শারীরিক অসুস্থতা সবার চোখে পড়ে। এ সময় শিশুটি ব্যাথায় ছটফট করছিল। এর কারণ জানতে চাইলে শিশুটি তার মাকে বিস্তারিত জানায়। পরে চিকিৎসার জন্য ১৫ জুন তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে জড়িত সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসানকে (৩৫) এবং ঘটনাটি গোপন রাখা ও শিশুটিকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আহম্মদ কবিরের (৩৫) বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন মামলা করেন শিক্ষার্থীর বাবা।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে গেলে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. জসিম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আহম্মদ কবির স্যার ও সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান কয়েকদিন ধরে মাদরাসায় আসেন না।’
জানতে চাইলে সদর থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন জানান, ‘মামলাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পিডিএস/আরডি