বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ২৬ মে, ২০২৪

উপজেলা পরিষদেই বাল্যবিয়ে দিলেন চেয়ারম্যান শামসুল

নওগাঁর বদলগাছীতে নিজ কার্যালয়ে বসে বাল্যবিবাহ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শামসুল আলম খাঁনের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ শে) মে রাত ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানির পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরূপ সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার বৈকুন্ঠপুর গ্রামের মো. শামীম হোসেনের ১৬ বছরের ছেলের সঙ্গে কিশোর প্রেমের টানে কিছু দিন আগে ঘর ছাড়ে ব্যাসপুর গ্রামের ১৫ বছরের কিশোরী। পরে তারা গ্রামে ফিরলে নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে সহযোগিতা চান। চেয়ারম্যান সামছুল ছেলে-মেয়েসহ উভয় পরিবারকে উপজেলা পরিষদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে নেন। পরে উভয়ের পরিবারের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষে রাত নয়টায় নিজ কার্যালয়ে স্থানীয় কাজী (বিয়ে রেজিস্টার) জাকির হোসেনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ দেন।

এদিকে গোপন খবরের ভিত্তিতে উপজেলার কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পান। এ সময় চেয়ারম্যান শামসুলকে বর-কনের বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিয়ে বন্ধ না করার অনুরোধ করেন।


  • * ঘটনাস্থলে সাংবাদিক উপস্থিত হলে বিয়ে বন্ধ না করার অনুরোধ
  • * তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানালেও যায়নি পুলিশ
  • * চেয়ারম্যানের দাবি, উভয় পরিবার নিয়ে বিয়ে দিচ্ছেলেন, তবে বিয়ে হয়নি

বাল্য বিয়ের বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোসা. আতিয়া খাতুনকে জানানো হলে একে একে সবাই উপজেলা পরিষদ ত্যাগ করেন। তবে জানানোর পরে প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষার করেও আইন প্রয়োগকারী কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।

বাল্য বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্টার (কাজী) জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাকে ফোন করে ডেকে আনেন উপজেলা চেয়ারম্যান। লেখালেখি শুরু করতেই আপনারা এসেছেন।’ জন্মনিবন্ধন বা ভোটার আইডি দেখতে চাইলে বাইরে থেকে আনার কথা বলে ঘটনার স্থান ত্যাগ করেন তিনি।

জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শামসুল আলম খাঁন বলেন, ‘বিয়ে দেওয়া মেয়েটি এতিম। তাই উভয় পরিবারের লোকজন নিয়ে বিয়ের কাজ করছিলাম। তবে বিয়ে হয়নি।’

জানানো পরও ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর কেউ উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. আতিয়া খাতুনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘বাল্য বিষয়ে ঘটনাটি সম্পর্কে আমি জানি না। না জেনে মন্তব্য দেওয়া ঠিক হবে না। তবে বাল্য বিয়ে উপজেলা পরিষদে শুধু নয়, সব জায়গায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’ সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানানো পরও ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে তিনি তদন্ত করবেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close