মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ২৬ মে, ২০২৪

মিরসরাইয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন, প্রতিবাদ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষকদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে।

রবিবার (২৬ মে) দুপুরে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ওয়ার্লেসে অবস্থিত দারুল উলুম মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক জোবায়েকে থানা-হেফাজতে নিয়েছে।

মারধরে আহত স্থানীয় তরুণ তানভীর শাহরিয়ার রিয়াজ জানান, ওয়ার্লেস দারুল উলুম মাদ্রাসায় যৌন নিপীড়নের ঘটনা আজ নতুন কিছু নয়। এর আগে বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। যতবারই ঘটে, ততবারই মাদ্রাসার পরিচালক মুহাম্মদ শোয়াইব গোপনে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো বিচার না করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

সরেজমিনে জানা যায়, শনিবার রাতে ওয়ারলেস দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক জোবায়ের হেফজ বিভাগের এক শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে। রবিবার সকালে ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা বিষয়টি মাদ্রাসার ক্যান্টিনে জানায়। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ক্যান্টিনে এসে পরিবারকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। এর মধ্যে ঘটনাটি স্থানীয় বাসিন্দারা জানার পর মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে যায়। এই নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা এবং মাদ্রাসার শিক্ষকদের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।

হাতাহাতিতে মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা ইব্রাহীম, স্থানীয় তরুণ তানভীর শাহরিয়ার রিয়াজ ও নুরনবী বশর আহত হন। আহতরা উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে খবর পেয়ে মিরসরাই থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনে। অভিযুক্ত শিক্ষক জোবায়ের আটক করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসে।


  • * প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয়দের ওপর হামলার অভিযোগ
  • * অভিযুক্ত শিক্ষক থানা হেফাজতে
  • * আগেও ওই মাদ্রাসায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, হয়নি শাস্তি

স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর শাহরিয়ার জানায়, শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি জানার পর আমি মাদ্রাসার ভেতরে গিয়ে শিক্ষকদের কাছে জানতে চাই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালান। এ সময় স্থানীয় অন্যরা এগিয়ে এলে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের ওপরও হামলা চালায়।

যৌন নিপীড়নের শিকার শিশু শিক্ষার্থীর বলে, শনিবার দুপুর ৩টার দিকে হুজুরের (শিক্ষক) কাছে পড়তে গেলে দুই পৃষ্ঠা কোরআন পড়িয়ে বিকাল ৪টার পরে যাওয়া কথা বলে ছুটি দেন। বিকাল ৪টার পরে ওই শিক্ষকের কাছে পড়তে গেলে তার পড়নের কাপড় খুলে নিয়ে নিপীড়ন চালায়। বিষয়টি তার সহপাঠিরাও দেখে।

জানতে চাইলে মাদ্রাসার পরিচালক মুহাম্মদ শোয়াইব বলেন, ‘দোষী তো প্রতিষ্ঠান না, দোষী একজন ব্যক্তি। অভিযুক্ত বাঁশখালী হুজুরকে পুলিশ নিয়ে গেছে। তিনি যদি প্রকৃত অন্যায়কারী হন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়রা এভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা চালানোর বিষয়টি আমাকে ব্যথিত করেছে।’

যোগাযোগ করা হলে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। যৌন নিপিড়নের শিকার শিশু শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে থানায় কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে হাতাহাতির ঘটনার বিষয়টি সর্ম্পকে আমি অবগত নই।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close