মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মাহিয়া হত্যা
পাঁচ লাখ টাকায় রফার চেষ্টা ২০ দিনেও হয়নি গ্রেপ্তার
![](/assets/news_photos/2024/05/26/image-459013.jpg)
মানিকগঞ্জের আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) বালিকা মাদ্রাসার ছাত্রী মাহিয়া আক্তারের হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় ৫ লাখ টাকায় রফা করতে চাইছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এমনকি হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পর জেলার পুলিশ সুপারের (এসপি) নির্দেশ থানায় মামলা নেওয়া হলেও গত ২০ দিনেও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এর প্রতিবাদে মানিকগঞ্জ মাহিয়া আক্তারের হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
রবিবার দুপুরে এলাকাবাসীর আয়োজনে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের নবগ্রাম পূর্ব নবগ্রাম এলাকায় এই মানববন্ধন হয়। পরে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে।
কর্মসূচিতে হত্যার শিকার ছাত্রীর মা আইরীন আক্তার, প্রতিবেশী রোমানা বেগম, আব্দুল হালিম, আব্দুর রহমান ও জাহেদা বেগমসহ এলাকাবাসীর পক্ষে কয়েকজন বক্তব্য দেন।
এজাহারে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তরা হলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম এলাকার বাবলী আক্তার, ঢাকার ধামরাইয়ের ফরিঙ্গা এলাকার মারিয়াম আক্তার এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভুল জয়রা এলাকার বাসিন্দা ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. মাইনুদ্দিন।
এজাহার সূতে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল সকালে খেলার কথা বলে মাহিয়া আক্তারকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে মারধর ও বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেয় মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালে নেওয়া নেওয়ার পথে মাহিয়ার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ৬ মে পুলিশ সুপারের সাহায্যে বাবলী আক্তার, মারিয়াম আক্তার ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাইনুদ্দিনকে আসামি করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন মাহিয়ার মা আইরীন আক্তার।
- * মাহিয়াকে মারধরের পর ছাদে থেকে ফেলে হত্যা
- * প্রথমে অনিহা, পরে এসপির নির্দেশ থানায় মামলা গ্রহণ
- * মাহিয়া হত্যায় জড়িতদের বিচার চেয়ে রাস্তায় এলাকাবাসী
মাহিয়ার মা বলেন, ‘মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার দিন মানিকগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। দীর্ঘদিন থানায় ঘুরেও মামলা করতে পারি নাই। চলিত মাসের ৫ তারিখে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার পর তার নির্দেশে থানায় মামলা নিয়েছে। কিন্তু মামলার আগে-পরে মাদ্রাসার শিক্ষকরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য ৫ লাখ টাকার দিতে চেয়েছে। টাকা দিয়ে কী করব, আমি মেয়ের হত্যার বিচার চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ‘মাহিয়াকে হত্যার পর মাদ্রাসার শিক্ষকরা টাকা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেছে। মাহিয়ার হত্যার বিচার চাই, যাতে আর কোনো মাদ্রাসায় এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।’ সেই মামলার পরও আসামিদের গ্রেপ্তার না করায় পুলিশের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. মাইনুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেনে জানান, ‘মামলার প্রধান আসামী মো. মাইনুদ্দিন হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিনে আছেন। বাকি আসামিরা পলতাক রয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।’