কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এ বছর ভুট্টা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের প্রণোদনাসহ সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিয়ম মেনে চাষ করায় ফলনও হয়েছে। দাম ভালো থাকায় লাভের মুখ দেখছেন অর্থকরী এ ফসল চাষে কৃষকেরা। আগামীতে এ ফসলের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা কৃষক ও কৃষি বিভাগের।

কুমারখালী উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, কুমারখালীতে এ বছর সরকারি প্রণোদনায় ভুট্টা চাষে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে ৫৬০ জনকে। যে কারণে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোট এক হাজার ৫৪৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। যেটি গত মৌসুমের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৭৮ হেক্টর। মণ প্রতি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করে বিঘা প্রতি কৃষক পাচ্ছেন ৪০-৪৫ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচের দ্বিগুন লাভ হচ্ছে কৃষকের।

চর জগন্নাথপুরের কৃষকের রবিউল শেখ বলেন, অতীতে ভুট্টার চাষ না করলেও কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এই ফসলের চাষ শুরু করি। কমখরচ, অল্প খাটুনি এবং রোগ বালাই কম হওয়ায় অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে বেশি লাভ হচ্ছে।

আরেক কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমার ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ রয়েছে। বাড়িতে ডেইরি ফার্ম থাকায় খেসারী ও অন্যান্য উপাদানের সাথে ভুট্টা মিশিয়ে গাভীর খাবার তৈরি করি। বাজারে প্রচলিত গো-খাদ্যের তুলনায় এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি হলেও তুলনামূলক ভাবে খরচ অনেক কম হয়। এছাড়া অবশিষ্ট অংশ মুরগি, মাছসহ অন্যান্য প্রাণীর খাবার হিসেবে বিক্রি করি।

জগন্নাথপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, পূর্বে এই ইউনিয়নের হাসিমপুর দয়রামপুরে ভুট্টার তেমন কোন আবাদ না থাকলেও সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দানাদার এ ফসল চাষ শুরু কৃষকেরা। লাভবান হওয়ায় বৃদ্ধি পাচ্ছে ফসলের আবাদ। চলতি মৌসুমে এই ইউনিয়নে ১০০ হেক্টরের উপরে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।

অন্যদিকে কুমারখালীর পাইকাররা জানান, সরাসরি মাঠ থেকে ক্রয়কৃত ভুট্টা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে তাদেরও মিলছে কাঙ্খিত মুনাফা।

কুমাখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, কম খরচ ও স্বল্পপরিশ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় প্রতিবছরই ভুট্টা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকদের প্রণোদনা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়।