আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলী
খাল-বিলে কমে গেছে পানি, দেখা যায় না দেশি মাছ
বরগুনার আমতলীতে দেশীয় মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত ওয়াপদার বেড়িবাঁধের ভেতরে খাল-বিলে পানি কমে গেছে। এতে হাটবাজারে কমে গেছে দেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এ অবস্থায় নিয়মিত ধান ও অন্যান্য ফসলাদি চাষাবাদ করায় বিলের মধ্যে ছোট খালগুলো অস্থিত্ব এখন মৃত।
জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলে ওয়াপদার বেড়িবাঁধের ভেতরে খাল-বিলে চোখে পড়ে না। সাগরের উজান থেকে প্রবাহিত পানি শাখা নদী পায়রা ও আন্ধারমানিক দিয়ে বেড়িবাঁধের সুইজ গেট দিয়ে শত শত ছোট খাল-বিলের মধ্যে প্রবেশ করলেও শুকনা মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না। লোকালয়ে খাল-বিল বন্ধ ভরাট করে অনেকে ধানী জমিতে পরিণত এবং তৈরি করা হয়েছে আবাসন। খালগুলো সরকারি জমি থাকলেও দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা।
নদীর সাধারণ পানিপ্রবাহের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের বেড়া ও মাটি দিয়ে বাঁধ। ফলে বর্ষা মৌসুমের পর অর্থাৎ শুকনা মৌসুমে নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুরে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় মা মাছ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে বর্ষার শুরুতে বংশবিস্তার করতে পারছে না। ফসলের জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহারে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়েছে।
একইসঙ্গে ব্যাপকহারে কারেন্ট জালের ব্যবহার বেড়েছে। খাল-বিল ও পুকুরে মাছের আকারভেদে এ সব জালের ব্যবহার করায় মা মাছসহ ছোট পোনা মাছের বাচ্চাও ধরা পড়ছে। বাজারে ভরা মৌসুমে দেশি জাতের কৈ, টাকি, টেংরা, পুটি, বাইন, শিং, মাগুড়, শোল, পাবদা, খৈলশা, ফাইলশা, গুলিশা, শলা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি, হরিনা চিংড়ি, মৌ কাটালি, বোয়াল, গজাল, তিতপুটি, মলিনদা পুটি আরো শতাধিক জাতের দেশি মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।
আমতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মাহমুদুল হাসান জানান, মৎস্যসম্পদকে রক্ষার জন্য নদী-নালা, খাল-বিলের গতি প্রবাহ ঠিক রেখে আবশ্যক দেশি মাছের অভয়াশ্রম গড়ে তোলার পাশাপাশি ডিমওয়ালা ও মা মাছ রক্ষার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।
আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ঈসা জানান, কারেন্ট জাল, হাতে টানা ঘন কারেন্ট জাল ব্যবহার রোধসহ জমিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমাতে পারলে অন্তত বর্ষা মৌসুমে দেশি মাছগুলো বংশ বিস্তার করতে পারবে।
পিডিএস/আরডি