নিজস্ব প্রতিবেদক
শেখ হাসিনাকে অ্যাটর্নি জেনারেল
দেশে এসে মামলা মোকাবিলা করুন
শেখ হাসিনাকে দেশে এসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার মামলা মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। গতকাল রবিবার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেলের ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ আসে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে যেহেতু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, সেক্ষেত্রে তিনি যে দেশে আছেন, সেদেশের সঙ্গে বহিঃসমর্পণ চুক্তি থাকলে তার আওতায় ব্যবস্থা নিতে পারে। দ্বিতীয়ত ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে যে দেশে তিনি আছেন, সে দেশের আইনে তা পড়ে কি না তা বিবেচনায় নিয়ে তা করতে হবে। এটা হলো রাষ্ট্রীয়ভাবে।’ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথা বলেছেন। তার বক্তব্য-বিবৃতি বিশ্লেষণ করে দেখতে পারেন; তারা (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে) বলতেন, সাহস থাকলে বাংলাদেশে এসে আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বিচারের মুখোমুখি হোন। আশা করি, তিনি (শেখ হাসিনা) এটা বিশ্বাস করেন এবং এটা তার জন্য ভালো হবে।’
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতেই আছেন। ভারত সরকারও সম্প্রতি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এদিকে গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার সরকারের মন্ত্রী, সাবেক এমপিসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক অভিযোগও জমা পড়েছে ট্রাইব্যুনালে।
এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনা এবং আরেকটি মামলায় ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তার দুই ভাতিজা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নামও রয়েছে ওই ৪৫ জনের মধ্যে। পরোয়ানা জারি হয়েছে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধেও।
শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিক, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জাফর ইকবালের নামেও জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এ ছাড়া সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক ডিজি হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক প্রলয় কুমার জোয়ার্দারের নাম রয়েছে ওই তালিকায়।
"