ইসরাফিল নাঈম, চরফ্যাশন

  ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

ভোলার চরফ্যাশন

‘ব্ল্যাক বেবি’ তরমুজে ভাগ্য বদল আমিরের

শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনো সময় দুই থেকে তিনবার এই তরমুজ চাষ করা যায় বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে

ভোলার চরফ্যাশনের শশীভূষণে আমির হোসেন নামের এক চাষি প্রথমবারের মতো মাচায় ‘ব্ল্যাক বেবি’ জাতের তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। তরমুজ চাষে দুই মাসেই ভাগ্য বদলে গেছে তার।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে তিনি ১ লাখ ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। তার খামারে এখনো ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ রয়েছে। এসব তরমুজ চাষ করতে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ৫০ হাজার টাকা। শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনো সময় দুই থেকে তিনবার এই তরমুজ চাষ করা যায় বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, অনাবাদি জমিতে ক্যানেল করে বাঁশ ও ছেঁড়া ইলিশ জাল দিয়ে মাচা তৈরি করে প্রথমবারের মতো নিজের ২৪ শতক জমিতে ‘ব্ল্যাক বেবি’ জাতের তরমুজের বীজ বপণ করেন কৃষক আমির হোসেন। পল্লী-কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে এবং পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর সহযোগিতায় তিনি একটি পরিপূর্ণ তরমুজের খামার তৈরি করেন। এতে তার ৫০ হাজার টাকা খরচ হলেও দুই মাসের মাথায় বাম্পার ফলন হওয়ায় তিনি প্রথম বিক্রিতেই দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন।

তরমুজচাষি আমির হোসেন জানান, তিনি পেশায় একজন সবজি চাষি ছিলেন। বাজারে বিদেশি জাতের ‘ব্ল্যাক বেবি’ তরমুজ চড়া দামে বিক্রি হতে দেখে ওই তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ে তার। তিনি বেসরকারি সংস্থা পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) এর সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো এই তরমুজ চাষ শুরু করেন। নিজের ২৪ শতাংশ জমিতে প্রথমবারের মতো মাচায় তরমুজ চাষ শুরু করেন তিনি। এতে দেখা যায় অল্প পুঁজিতে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ কারণেই তিনি আগামী বছর ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ তিনগুণ বাড়ানো কথা ভাবছেন।

আমির হোসেন বলেন, স্থানীয় বাজারে ব্ল্যাক বেবি তরমুজের প্রচুর চাহিদা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্ল্যাক বেবি তরমুজ ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি করেন। এক একটি তরমুজের ওজন ২ থেকে ৫ কেজি হয়ে থাকে।

এছাড়া তার চাষ করা এসব তরমুজ চরফ্যাশন সদর বাজারের গন্ডি ছাড়িয়ে জেলার বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। তার এই সফলতা দেখে গ্রামের অনেক মানুষ বেবি তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, তিনি একাধিকবার ওই চাষি আমির হোসেন ব্ল্যাক বেবি তরমুজের খামার পরিদর্শন করেছেন। চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিবার উন্নয়ন সংস্থা (এফডিএ) কৃষি সম্প্রসারণে মাঠ পর্যায়ে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষের প্রসার বাড়তে কাজ করছে।

রোকনুজ্জামান আরো বলেন, সাধারণ তরমুজের চেয়ে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদু। পরিবার উন্নয়ন সংস্থার (এফডিএ) সার্বিক সহযোগিতায় উচ্চ মূল্যের এ ফসল আবাদ করার মাধ্যমে কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। আমরা আশা করছি, ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চরফ্যাশনের গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলার বাইরেও দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close