জহির রায়হান, কাউনিয়া (রংপুর)

  ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

রংপুরের কাউনিয়া

এক লাইনম্যানে চলে বিটিসিএল কার্যালয়, সংযোগ কমে ৬২

রংপুরের কাউনিয়ায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। শুধু একজন লাইনম্যান দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে গ্রাহক সংখ্যা কমে প্রায় শূন্যের কোঠায়। দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় বিটিসিএল কার্যালয়। বিভিন্ন সমস্যা ও জনবল সংকটে সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ঘুরে যাচ্ছেন গ্রাহকেরা।

একাই কাজ করার কথা স্বীকার করে লাইনম্যান শিবলি মিয়া জানান, আগের মতো তেমন কাজ না থাকায় তার কোনো অসুবিধা হয় না।

উপজেলা বিটিসিএল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এক্সচেঞ্জটি ১৯৮৪ সালে স্থাপিত হয়। ২০০৬ সালে এ উপজেলায় বিটিসিএলকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করা হয়। কাউনিয়ায় ৫০০টি টেলিফোন সংযোগের সক্ষমতা সম্পন্ন এক্সচেঞ্জটি প্রথমে ২৭৫টি লাইন সংযোগ দেওয়া হয়। পরে বকেয়া বিল ও গ্রাহকের অনীহার কারণে বর্তমান সংযোগ আছে ৬২টি। জনবল সংকট ও ক্যাবলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বর্তমানে সরকারি ২২টি ও বেসরকারি ৪টি টেলিফোন এবং ৪টি ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। ৩৬টি বিচ্ছিন্ন ও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে অনেক দিন ধরে। জায়গায় জায়গায় খু্ঁিট পড়ে আছে দীর্ঘদিন থেকে। সংযোগ নেই কিন্তু নিয়মিত বিল আসে বাকিগুলোর।

কয়েকজন গ্রাহক জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাদের টেলিফোন লাইন অচল। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর বন্ধ থাকায় ফোন চলে না। টেলিফোন ব্যবহার না হলেও ন্যূনতম বিল ঠিকই গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। সেবা না পাওয়ায় সরকারী অফিস গুলোতেও এখন আর টেলিফোন ব্যবহার হয় না।

সরেজমিনে কাউনিয়া টেলিফোন একচেঞ্জ অফিসে দেখা গেছে কোনো জনবল নেই। একজন লাইনম্যান দিয়ে চলছে অফিস। অনেকেই সেবা বঞ্চিত হয়ে টিঅ্যান্ডটি ফোন হস্তান্তর করে দিয়েছে।

জানা যায়, ব্রিটিশ ভারতে ১৮৫৩ সালে ডাক ও তার বিভাগের আওতায় ‘টেলিগ্রাফ শাখা চালু হয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে ‘পাকিস্তান টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বিভাগ নামে আলাদা সরকারি বিভাগ হিসেবে পুনর্গঠিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বিভাগ হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই বিটিটিবিকে বিটিসিএলে রূপান্তর করা হয়।

গ্রাহক সারওয়ার আলম মুকুল বলেন, শুধু একজন লাইনম্যান দিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে। আগের মতো টেলিফোন ভালো সেবা না থাকায় বাতিল করে দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিদুল হক জানান, মোবাইল আসায় এখন আর ফোন ব্যবহার করা হয় না।

রংপুর বিভাগীয় বিবিটিসিএলের কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, আগে একটি এক্সচেঞ্জে একজন অফিস সহায়ক ও একজন লাইনম্যান ছিল। এখন একজন করে জুনিয়র লাইনম্যান কাজ করে। কোনো জায়গায় একজনও নেই। ৫জি বাস্তবায়নের কাজ হয়ে গেলে জনবল সংকট ও দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা (অফটিক্যাল ফাইবার) স্বাভাবিক হবে। কাউনিয়ার বিটিসিএলের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিকল টেলিফোন সংযোগ সচল ও বিচ্ছিন্ন সংযোগ মেরামতের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close