বরফ গলছে ইউক্রেন-রাশিয়ার, আলোচনায় সম্মতি
রাশিয়ার ভয়াবহ হামলায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছে ইউক্রেন। এ অবস্থায় কিয়েভ ইস্যুতে সুর নরম করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দুদিনের কিয়েভ সফরের শেষ দিনে বুধবার (১৫ মে) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যদি রাশিয়া 'আগ্রহ দেখায়' তাহলে সংঘাত বন্ধে মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছে কিয়েভ।
ব্লিঙ্কেন বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাডিমির পুতিন যদি আন্তরিকভাবে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান, তাহলে আমি নিশ্চিত ইউক্রেন আলোচনায় বসতে রাজি হবে। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় এ ব্যাপরে রাশিয়ার কোন নিতিবাচক পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছিলেন, পশ্চিমারা 'শান্তি' শব্দটির আড়ালে একটা ধূম্রজাল সৃষ্টি করে রেখেছে। তাদের আকাঙ্খা অন্য কিছু। ফশ্চিমা দেশগুলো সবাই মিলে এ অঞ্চলে প্রকৃত অর্থে কোন শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।
চীনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইউক্রেনের সঙ্গে বসতে রাজি আছে রাশিয়া। তবে, তা হতে হবে দুপক্ষের জন্য মঙ্গলজনক। এতে পশ্চিমারা কোনো ধরনের ইন্ধন দিতে পারবে না।
পুতিন আরো বলেন, ইউক্রেন-সংকট সমাধানে চীনের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারে আমরা সমসময় ইতিবাচক। আমরা কখনো ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি সংলাপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করিনি। বেইজিং সত্যিই এই সংকটের মূল কারণ এবং এর বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক প্রভাব বোঝে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, গত মাসে চীনা প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং ইউক্রেন সংকট সমাধানে যে নীতির কথা বলেছেন, তাতে সংঘাতের পেছনের কারণগুলো বিবেচনা করা হয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে বৈঠকে সি জিনপিং ইউক্রেন-সংকট সমাধানের লক্ষ্যে যেসব নীতির কথা বলেছেন, সেগুলোকে বাস্তব এবং গঠনমূলক বলেও মত দেন পুতিন। তার মতে, বেইজিংয়ের প্রস্তাব স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানার জন্য বেইজিং প্রায় এক বছর আগেই ১২ দফার একটি প্রস্তাব পেশ করলেও তখন রাশিয়া বা ইউক্রেন কোনো পক্ষই প্রস্তাবটির ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রস্তাবটির সমালোচনা করে বলেছিল, চীন এখানে নিজেকে শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবে দেখাতে চাইলেও রাশিয়ার মিথ্যা বয়ানকেই তারা প্রচার করেছে এবং রুশ আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গত মাসে চীনের প্রস্তাবকে যুক্তিসংগত পরিকল্পনা হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
পিডিএস/এমএইউ