ক্রীড়া ডেস্ক
কৌশলী ইংল্যান্ড নির্ভীক ক্রোয়েশিয়া
‘আমরা কয়েকটি কঠিন ম্যাচ জিতে এসেছি।’ কঠিন ম্যাচই ছিল বটে ক্রোয়েশিয়ার কোচ জøাতকো দালিচের জন্য। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনা, নকআউট পর্বে ডেনমার্ক ও স্বাগতিক রাশিয়াকে হারানো কম কথা নয়। তাই হয়তো সংবাদ সম্মেলনে গর্ব করে এমন কথা বলতে পারেন দালিচ। ২০১৭ সালে ক্রোয়েশিয়ার হাল ধরার পর থেকেই তো ক্রোয়াটরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে দিন দিন। বিশ্বকাপে তার প্রতিফলনই দেখিয়েছে লুকা মডরিচ-ইভান রাকিটিচরা। কিন্তু আজকে যে অলিখিত ফাইনালে নামতে হচ্ছে ক্রোয়াটদের। তার মধ্যে প্রতিপক্ষ সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। তবে এসব থোড়াই কেয়ার করেন কোচ দালিচ। না হলে এমন অকুতোভয় থাকেন কীভাবে এই ৫১ বছর বয়সী কোচ! প্রতিপক্ষকে ভয়ের চেয়ে সম্মানটাই বেশি করছেন তিনি।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে দালিচ বলেন, ‘আমরা ইংল্যান্ডকে সম্মান করি। আমরা তাদের নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন কারণ তারা চমৎকার একটি দল। কিন্তু ইংল্যান্ড আমাদের চেয়ে ভালো দল নয়। আমরা তাদের সম্মান করিÑ তাদের খেলোয়াড়রা তরুণ এবং সম্ভাবনাময়। প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।’
১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে এসেই বিশ্বকে তাক লাগিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু এরপর নিজেদের জাতটা সেভাবে আর চেনাতে পারেনি তারা। ২০ বছর পর আরেকবার শেষ চারে ক্রোয়াটরা। এত দূর আসতে পারাটাকে বিশেষ কিছু হিসেবে দেখছেন দালিচ। তিনি আরো বলেন, ‘এই বিশ্বকাপে যা কিছু অর্জন করেছি তার জন্য অত্যন্ত খুশি আমরা। বিশ্বের এখন সেরা চারটি দলের মধ্যে আমরা একটি। আমাদের কিছুই নেই তবে ইংলিশদের আমরা সম্মান দেখাচ্ছি। বেলজিয়াম এবং ফ্রান্সকেও। কিন্তু কোনো দলই আমাদের চেয়ে ভালো নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের পুরনো সফলতার কথাটাও মনে করিয়ে দিলেন দালিচ। ‘ফ্রান্সে আমাদের চমৎকার একটা স্মৃতি আছে। সেবারও আমরা শেষ চারে ছিলাম। আমাদের খেলোয়াড়রা দারুণ একটা কাজ করেছিল। যদিও তার পুরাবৃত্তি করা কঠিন। কিন্তু আমরা আমাদের সেরাটাই ঢেলে দেব।
ক্রোয়েশিয়াকে আজ ভুগাতে পারেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেন। এরই মধ্যে ৬ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। তবে লুঝনিকিতে আজ কেনকে থামানোর জন্য দালিচ দায়িত্ব দিয়েছেন ডিফেন্ডার দেয়ান লভরেনকে। লভরেনও কোচের দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে বলেন, ‘সে (কেন) প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। সে যে কৃতিত্বটা পায় সেটা তার প্রাপ্য। গত কয়েক মৌসুমে কেন সব সময় ২৫টার বেশি গোল করেছে। সে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন। তবে এই স্ট্রাইকারদের আমি চ্যালেঞ্জ জানাতে পছন্দ করি। দেখাতে চাই আমি অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার।’
খেলোয়াড় হিসেবে দলকে সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দিতে পারেননি। তবে এবার কোচ হিসেবে দলকে ৫২ বছর পর ফাইনালে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। কিন্তু ম্যাচের আগে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে চান না। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনেও সেই কথাটি জানালেন তিনি। আত্মবিশ্বাসের সুরে তিনি বলেন, ‘আমার যতই বয়স বাড়ছে ততোই আমি সচেতন হচ্ছি। যাতে আমি চ্যালেঞ্জ এড়াতে পারি। কিন্তু পরিশেষে আপনি কখনো জানবেন না সাফল্যের সম্ভাবনা কতটুকু বা সাফল্যের মুহূর্ত কবে আসতে পারেÑ এই তো গত সপ্তাহেই আমরা তা জানতাম না।’
সাউথগেট যতই চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে যেতে চান না কেন, আজকের ম্যাচটা তিনি অবশ্যই জিততে চাইবেন। খেলার কৌশল হিসেবে হয়তো মুখ খুলতে নারাজ তিনি। এমনিতে কূটনৈতিক হিসেবে বিশ্বে খ্যাতি আছে ইংলিশদের।
"