নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

২ হাজার কোটি টাকা পাচার

বরকত-রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে অধিকতর চার্জশিট আমলে গ্রহণ করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে পলাতক ৩৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল এ তথ্য জানান। এর আগে গত ২২ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান চার্জশিট জমা দেন।

চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী, যুবলীগ নেতা আসিবুর রহমান ফারহান, সাবেক মন্ত্রীর এপিএস এ এইচ এম ফোয়াদ ও অ্যাডভোকেট সত্যজিৎ মুখার্জী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাইন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মোকররম মিয়া বাবু, ফরিদপুরের পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলী মিনার, তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম ওরফে টাওয়ার শামীম, সাবেক মন্ত্রীর ভাই বাবরের ঘনিষ্ঠ সহচর বিল্লাল হোসেন ওরফে মুরগি বিল্লাল, ফরিদপুর চেম্বারের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা দীপক মজুমদার, ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র শেখ মাহাতাব আলী মেথু, সফিকুল ইসলাম, কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত, জেলা শ্রমিক লীগের একাংশের সভাপতি ও মোটরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসির, ব্যবসায়ী জামাল আহমেদ খান, বেলায়েত মোল্লা, আহসান হোসেন খান, যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার চৌধুরী মো. হাসান, রুবেল-বরকতের সহযোগী জাফর ইকবাল, বরকতের স্ত্রী আফরোজা পারভীন, রুবেলের স্ত্রী সোহেলী ইমরুজ, আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব সরোয়ার, স্থানীয় সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন বাবু, যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার পাল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জাহিদ ব্যাপারী, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা খলিফা কামাল উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর নাফিজুল ইসলাম তাপস, রুবেল-বরকতের সহযোগী রিয়াজ আহমদ, ডিক্রিরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আবু, মনিরুজ্জামান, মাহফুজুর রহমান, সুমন সাহা, আবদুল জলিল শেখ, রফিক মণ্ডল, আজমল হোসেন খান ওরফে ছোট আজম, ঠিকাদার খন্দকার শাহিন আহমেদ ওরফে পান শাহিন ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান (দোলন)।

এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আসামি বরকত, রুবেল, ফোয়াদ ও বাবর কারাগারে রয়েছেন। এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ বরকত ও রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এ অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি থেকে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ২০২০ সালের ২৬ জুন অবৈধ উপায়ে ২ হাজার কোটি টাকা আয় ও পাচারের অভিযোগে বরকত ও তার ভাই রুবেলকে প্রধান আসামি করে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করে সিআইডি। ২০১২ সালের অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন সংশোধনী-২০১৫-এর ৪ (২) ধারায় এ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এছাড়া মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন তারা। এসি, নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ডাম্প ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা। প্রথম জীবনে এ দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফাই-ফরমাশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না। এ দুই ভাই অন্তত ২ হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close