উপজেলা পরিষদের ভোট শুরু হবে ঈদুল ফিতরের পর আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে। আগামী মে মাসেও এ ভোট হবে। ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৯ মার্চ। গতকাল সোমবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানানোর পাশাপাশি আরো কিছু তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, উপনির্বাচন ও সংরক্ষিত নারী আসনের তফসিল শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।

এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। যদিও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নিয়ে এ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছে না। বিএনপি এখনো দলীয়ভাবে এ নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার চিন্তা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে না। দলের যে কেউ অনেকটা স্বতন্ত্র প্রার্থীর মতো ভোট করতে পারবেন। দলের নেতাকর্মীরাও যার যার পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে পারবেন। আর বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে দলের অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে। এ অবস্থায় ইসির পক্ষ থেকে উপজেলা ভোটের সময় জানানো হলো।

ইসি সূত্র জানায়, ঈদুল ফিতরের আগে প্রথম ধাপের উপজেলা ভোট করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচির কারণে ভোট পেছাতে বাধ্য হয়েছে ইসি। এবার ধাপ কমিয়ে উপজেলার ভোট করার ইচ্ছা রয়েছে ইসির। সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের বিস্তারিত সময়সূচি পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। ইসি মো. আনিছুর রহমান আরো বলেন, দুই সিটি নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে।

ইসি আনিছুর বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আমরা এখনো পর্যালোচনা করছি এবং দেখছি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১২ মার্চ শেষ হবে। আবার ১০ বা ১১ মার্চ রোজা শুরু হবে। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে যে নির্বাচনগুলো করতে হবে, সেগুলো ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কিছু হবে। বাকিগুলো কয়েকটা ধাপে মে মাসে করা হবে। কারণ জুন মাসে আবার এইচএসসি পরীক্ষা।

ইসি সূত্র জানায়, এবারও কয়েক ধাপে উপজেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর ও ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্বাচন করার প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এর আগে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। ওই বছরের মার্চ থেকে শুরু হয়ে পাঁচ ধাপে ৪৫৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শেষ হয়েছিল জুনে। এর মধ্যে মার্চেই চারটি ধাপের ভোট হয়েছিল। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট হয় দলীয় প্রতীকে। বিএনপির এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এবার দলীয়ভাবে প্রার্থী না দেওয়ার কথা ভাবছে। এটি হলে এবারের নির্বাচন হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে।

২০২২ সালের জুনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আরফানুল হক। গত ১৩ ডিসেম্বর তার মৃত্যুতে মেয়র পদটি শূন্য হয়। আইনানুযায়ী, শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এ পদে নির্বাচন করতে হবে। ইসি আনিছুর রহমান বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। চার থেকে পাঁচ ধাপে এ নির্বাচন হবে। আর যেসব জায়গায় ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন সচল আছে, সেখানে ইভিএমেই ভোট হবে।

"