আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ

চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলতে চীনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি শুক্রবার ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে চীনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করতে বেইজিংয়ে তার প্রতিপক্ষ ওয়াং ই এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বলবেন বৈশি^ক রাজনীতিতে এখনবার কূটনৈতিক কর্মকৌশলের কথা। জুলাই মাসে লেবার প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার দায়িত্ব নেওয়ার পর ল্যামি হলেন প্রথম ব্রিটিশ মন্ত্রী যিনি চীন সফর করছেন। বেইজিং থেকে বার্তা সংস্থা জানায়, চীনের ভাইস প্রিমিয়ার ডিং জুয়েশিয়াং এবং কমিউনিস্ট পার্টির অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর ল্যামি ওয়াংয়ের সাথে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ডাউনিং স্ট্রিটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ল্যামি তার দুই দিনের সফরে সাংহাইয়ের পূর্ব মেগাসিটিতে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

তিনি মানবাধিকার এবং ইউক্রেন যুদ্ধের মতো ইস্যুতে বেইজিংকে চাপ দেওয়ার সময় একটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার মধ্যে একটি সূক্ষ্ম রেখা অনুসরণ করতে চাইছেন। দীর্ঘমেয়াদে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্থিতিশীল উন্নয়ন উভয় দেশের অভিন্ন স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

মাও সাংবাদিকদের বলেন, বেইজিং ‘কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি এবং সকল ক্ষেত্রে সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদারের’ আশা করেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘চীন অংশীদার হিসাবে দু’দেশের অবস্থান সমুন্নত করতে, উন্মুক্ততা ও সহযোগিতা বজায় রাখতে... এবং চীন-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালাতে যুক্তরাজ্যের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।’ ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন লন্ডন ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের ‘স্বর্ণযুগ’কে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু’দেশের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে।

তখন থেকে অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়েছে, মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের চীনের সমালোচনা বেইজিংয়ের কাছ থেকে তীব্র তিরস্কারের প্ররোচণা দিয়েছে।

সাইবার আক্রমণ ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সহ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ নিয়েও উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয়েছে।

যুক্তরাজ্য হংকংয়ে কয়েক মাস ধরে চলা গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর ২০২০ সালে হংকংয়ে বেইজিংয়ের ঢালাওভাবে জাতীয় সুরক্ষা আইন আরোপ করার সমালোচনা করে। লন্ডন এই পদক্ষেপটিকে হংকংয়ের মিনি-সংবিানে সুরক্ষিত অধিকার ও স্বাধীনতা ক্ষ্ণুণ্নকারী হিসাবে বিবেচনা করে থাকে। তবে বেইজিং মনে করে, এ আইন হংকংয়ের স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণ্ন হওয়ার পর এতে শান্তি ও সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধার করেছে।

বেইজিং যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশকে এমন একটি ইস্যুতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে বলেছে যা তারা সম্পূর্ণরূপে অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসাবে বিবেচনা করে।

সফরের প্রাক্কালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার জেলবন্দী হংকংয়ের ধনকুবের জিমি লাইকে হংকংয়ের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত সপ্তাহে লাইয়ের আইনি দল লন্ডনে সাংবাদিকদের বলে যে তারা আশা করে যে ল্যামি তার সফরের সময় জিমি লাইয়ের বিষয়টি ‘সামনে ও কেন্দ্রে’ রাখবেন। এ সব বিষয় ছাড়াও অন্যান্য বেশকিছু উদ্বেগের কারণে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে চীনের আচরণ এবং তিব্বতে মানবাধিকার নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বাদানুবাদ চলমান রয়েছে। লন্ডন অভিযোগ করছে বেইজিং জিনজিয়াংয়ে প্রায় এক মিলিয়ন উইঘুর মুসলিমকে আটক রেখেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close