দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
পুলিশের সামনে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৬
রাজশাহীর দুর্গাপুরে পুলিশিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন ছয়জন। গত রবিবার রাতে উপজেলার পানানগর ইউনিয়নের তেবিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- কিশমত তেকাটিয়া গ্রামের আবদুল হালিম (৪০), আবদুল লতিফ (৪৫), জাহাঙ্গীর আলম (৪৮), আজাহার আলী (৪২), সাইফুল ইসলাম (৪৪) ও রফিকুল ইসলাম (৪২)। আহতরা ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম খান রবিনের অনুসারী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শামসুল হক বলেন, পানানগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পুলিশিং কমিটি গঠনের জন্য দুর্গাপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এসআই ইব্রাহিম ও এসআই মুঞ্জুরুল ইসলাম উপস্থিত নেতাকর্মী, সুশীল মাজের প্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী ও ইমামদের কাছ থেকে তালিকা চাইলে স্থানীয় বিএনপির দুটি পক্ষ পৃথকভাবে দুটি তালিকা জমা দেয়। দুটি তালিকা জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশের হাত থেকে তালিকাটি ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী হোসেন।
এর জের ধরে আলী হোসেনের নেতৃত্বে তার দুই ছেলে মুরশিদুল ও মাহাতাব তার দলবল নিয়ে রবিনের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে ছয়জন আহত হন। পরে আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম খান রবিন বলেন, ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। তবে আমার অনুসারী কয়েকজন বিএনপি নেতার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে পানানগর ইউপির বিএনপির সভাপতি আলী হোসেন বলেন, আমি পুলিশের হাত থেকে তালিকা নিয়ে ছিঁড়ে ফেলিনি, আমি তালিকাটি নিয়ে দুই তালিকার সমন্বয় করে জমা দিতে চেয়েছি। যারা আহত হয়েছেন তারা পুলিশিং কমিটির পক্ষে নেই। তারা এ কমিটিকে বাধাগ্রস্ত করতে সংঘর্ষে জড়ায় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহিম জানান, পনানগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পুলিশিং কমিটি তৈরির জন্য আমরা উপস্থিত জনগণের কাছ থেকে তালিকা চাইলে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা সাইফুল ইসলাম ও শামীম হোসেন আমার কাছে দুটি তালিকা জমা দেয়। পৃথকভাবে দুটি তালিকা দেওয়ার জন্য উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আমার কাছে জমা দেওয়া তালিকা দুটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী হোসেন নিয়ে নেন এবং দুটি তালিকার মধ্যে থেকে নাম বাছাই করে একটি তালিকা তৈরি করে তিনি পরে জমা দেবেন। এ সময় উভয় পক্ষের উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আমি ও আপনার সঙ্গীয় এসআই মুঞ্জুরুল থানা চলে আসি। তবে শুনেছি পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল কবীর বুলু নিজেদের দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার সমাধান নিজেরাই করে নেবেন বলে জানান। দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হুদা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আহতদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
"