reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪

সাক্ষাৎকার : ‘হুব্বা’ চরিত্র সম্পর্কে মোশাররফ করিম

অভিনয়ে কোনো স্ট্রাগল নেই এটাকে ভালোবাসা বলব

নন্দিত অভিনেতা মোশাররফ করিম। প্রায় সব ধরনের চরিত্রে মিশে যাওয়ার যে নিপুণ দক্ষতা তার। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অনেক আগেই তিনি বিচরণ করেছেন ওপার বাংলায়, কুড়িয়েছেন প্রশংসাও। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে ব্রাত্য বসু পরিচালিত সিনেমা ‘হুব্বা’। একই দিনে সিনেমাটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহেও মুক্তি পাচ্ছে। এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। সিনেমাটিসহ নানা বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন তুহিন খান নিহাল

বাংলাদেশে ও ভারতে ‘হুব্বা’ মুক্তি পাচ্ছে, সিনেমাটি নিয়ে জানতে চাই?

-পশ্চিমবঙ্গের গ্যাংস্টার ‘হুব্বা শ্যামলের’ জীবনকাহিনি এই সিনেমার গল্প। আমার মতে, এই চরিত্রের অনেকগুলো দিক এবং স্তর রয়েছে। সেগুলো বেশ চ্যালেঞ্জিং। সেই চ্যালেঞ্জটা নিতেই ভীষণ ইচ্ছা করছিল, তাই নিয়ে ফেলি। তারপর ডাবিংয়ের সময় যখন ছবিটা দেখলাম, বেশ ভালো লাগল। মনে হলো পুরো বিষয়টা মন্দ হয়নি। তবে আমি সব সময় নিজেকে গল্প অনুযায়ী প্রস্তুত করি, চরিত্রের মধ্য দিয়ে নয়। সে জায়গা থেকে হুব্বাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।

এত নৃশংস একটি চরিত্র, নিজেকে মানিয়ে নিলেন কী করে?

- আমি বলব এই চরিত্রে ঢোকার ক্ষেত্রে কোনো স্ট্রাগল ছিল না। যুদ্ধ করে তো চরিত্রকে জয় করা যায় না। এটাকে স্ট্রাগল না বলে ভালোবাসাই বলব। ধীরে ধীরে, সময় নিয়ে ভালোবাসি। আর আমি আসলে স্ট্রাগল করি না। স্ট্রাগল শব্দটায় বিশ্বাসও করি না। আমার পরিবার কখনো আমাকে বাজারেও পাঠাতে পারেনি। কখনো কোনো আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত দিতে যেতে হবে, তখন আমি পালিয়ে যেতাম। কারণ ওখানে যাওয়াটা আমার কাছে ফাও পরিশ্রম মনে হতো। আমি করতাম না এসব। এজন্য বাড়ির সবাই আমাকে ‘কামচোরা’ বলত। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনার ক্যারিয়ারে কোনো স্ট্রাগল আছে কি না। আমি বলি নো স্ট্রাগল। পরিশ্রম করার লোকই আমি না। তবে হ্যাঁ, থিয়েটার করার জন্য যদি ১০ মাইল হেঁটে যাই। এই হেঁটে যেতে যদি আমার আনন্দ লাগে, তাহলে সেটাকে আমি স্ট্রাগল কেন বলব। সুতরাং, চরিত্রে ঢোকার মধ্যে স্ট্রাগল নেই। এটাকে আমি ভালোবাসা বলব।

সিনেমাটি এ দেশের দর্শক কেন দেখবেন? আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই?

- আমার মতে, সিনেমাটিতে ভালো গল্প আছে, ভালো নির্মাণ আছে, উপভোগ্য কিছু চরিত্র ও সংলাপ আছে, বিনোদন আছে। মোটকথা, ছবিটা উপভোগ করার মতো। পাশাপাশি আমি এ দেশের অভিনেতা, এতে আমি কাজ করেছি, তাই আমার জন্য সিনেমা হলে যাবেন এই মুভি দেখতে। এটা তো আমি বলতেই পারি এত দিন কাজ করে। দর্শকের কাছে তো আমার প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে বিশেষত্বের জায়গা থেকে বলব, আর দশটা বিদেশি কাজ যে কারণে দেখেন দর্শক, হুব্বাও সে কারণে দেখবেন।

পরিচালকের সঙ্গে প্রথম আলাপ হলো কীভাবে?

- ব্রাত্যদা ‘কমলা রকেট’ নামের আমার একটা ছবি দেখেছিলেন। আমার অভিনয় ভালো লাগে ওনার। তারপর ‘ডিকশনারি’ ছবির জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। তখনই আলাপ।

হুব্বা সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

- ব্রাত্য বসু আপাদমস্তক একজন শিল্পীমানুষ। মঞ্চ, টিভি, সিনেমা সবখানেই তিনি অসাধারণ। নানা রকম এক্সপেরিমেন্ট করেছেন ক্যারিয়ার জুড়ে। সেগুলো প্রশংসিত হয়েছে। আমি তার ‘ডিকশনারি’ ছবিতে কাজ করেছি। সেটা ছিল অন্য মেজাজের। হুব্বা একদমই আলাদা। অনেক গতিশীল, লাউড, ডার্ক। পরিচালক হিসেবে ব্রাত্যবসুর ম্যাজিকটা এখানেই, তিনি নতুন ভাবনার কাজ করতে এসেছেন, দারুণভাবে সফল হয়েছেন। মানুষ তো একজনই, শুধু ছবির আমেজটা পাল্টেছে। তাই নির্মাণের শক্তি, দর্শন, মুনশিয়ানাও একই রকম। আমার কাছে তিনি পারফেক্ট। উনি ছাড়াও সহশিল্পীদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাটাও দারুণ ছিল।

বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করতে হয় আপনাকে, কীভাবে এসব মাথায় ধারণ করেন?

- একটা উদাহরণ দিয়ে এই প্রশ্নের উওর দিচ্ছি। ধরেন, একজন সৎ মনোহারি দোকানদার। তিনি যদি লাড্ডু বানান, দাম ২ টাকা। আবার রসগোল্লাও বানান, দাম ৪ টাকা। কিন্তু লাড্ডুর জায়গায় লাড্ডুর কোয়ালিটি তিনি ঠিক রাখেন, আবার রসগোল্লার কোয়ালিটিও ঠিক রাখেন। অর্থাৎ তিনি যদি সৎ হন, তবে লাড্ডুকেও তিনি ধারণ করেন, আবার রসগোল্লাকেও ধারণ করেন। ব্যাপারটা এ রকম। সৎভাবে কাজটি করা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close