নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪

৬০ টাকার কমে নেই সবজি

নিত্যপণ্যের দাম আরো বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালসহ বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে ভোক্তা সাধারণ। ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরেও আরো চড়া হয়েছে সবজির দাম। ৬০ টাকার নিচে মিলছে না শীতকালীন কোনো শাক-সবজি। এক বছর আগেও শীতের এ সময়ে যে সব সবজির দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা। এ বছর একজন ক্রেতাকে তা কিনতে হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। ভরা মৌসুমে সবজির এ চড়া দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, আটা, ময়দা, ডাল, ছোলা, আদা ও রসুনসহ অরো বেশ কিছু নিত্যপণ্য। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়া প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, নির্বাচনের কারণে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে সাধারণ ভোক্তারা মনে করছেন, সরকারের ভোটের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির অতি মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছে মতো পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন।

কাওরানবাজারে বাজার করতে আসেন হালিমা ও মুক্তা নামের দুই শিক্ষার্থী। উভয়ই রাজধানীর একটি নার্সিং কলেজে পড়েন। গতকাল সকালে তারা বলেন, শীতকালেও সপ্তাহের ব্যবধানে শাক-সবজির দাম বাড়ছে। চাল, ডাল, আলু, পিঁয়াজের দাম আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এখন সরু (মিনিকেট) চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা দরে। যা ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা ছিল। মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চালের কেজিতে সর্বোচ্চ তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। দুই টাকা বেড়ে মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।

এদিকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া সবজির দাম। এরমধ্যে আরো একদফা বেড়েছে এ কাঁচা পণ্যটির দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। কাঁচা পেঁপে ও মুলা ছাড়া ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই। ভরা মৌসুমে শিম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। এক পিস লাউয়ের দাম ঠেকেছে ১০০ টাকায়। বাজারে বছরজুড়ে পাওয়া যায় এমন গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা ও বরবটির কেজিও ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

রাজধানীর মুগদা মদীনাবাগ বাজারে সাইফুল নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে এত শাক সবজি তারপরেও কেন এত দাম। গত বছর এ সময় তো এত দাম ছিল না। দুদিনের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। যা দুদিন আগেও ২০০ থেকে ২০৫ টাকা ছিল। সোনালি জাতের মুরগির দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংসের বেঁধে দেওয়া দাম ৬৫০ টাকা হলেও রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে ওই দামে গরুর মাংস মিলছে না। প্রতি কেজি গরুর মাংস এখন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ মাংস বিক্রির দোকানে নেই মূল্যতালিকাও।

মুদি বাজারে ছোলার কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন তা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের থেকে ১০ টাকা বেশি।

বাজারে আটা, ময়দা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম বেড়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকায় বলেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। এখন বাজারে প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এ দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া বাজারে পেঁয়াজের দাম সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকারমধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত। একই সঙ্গে রসুনের দাম ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আদার দাম ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close