reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ এপ্রিল, ২০২৪

১৮তম  মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস পেলেন ১৫ সাংবাদিক

শিশু সংক্রান্ত বিষয়াবলী নিয়ে অসাধারণ প্রতিবেদন করায় তিন শিশু সাংবাদিকসহ মোট ১৫ বাংলাদেশি সাংবাদিককে পুরস্কৃত করেছে ইউনিসেফ।

মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস শুরু হয় ২০০৫ সালে। তখন থেকে গণমাধ্যমে (প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম) প্রকাশিত দারুণ সব সাংবাদিকতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখছে এই পুরস্কার। এই অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে শিশু সাংবাদিকদের কাজকেও স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়।

মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস এর ১৮তম আসরে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রিন্ট, ফটো ও ভিডিও সাংবাদিকদের কাছ থেকে এক হাজারের বেশি কাজ জমা পড়েছে। গত বছর যেখানে জমা পড়েছিল ৩০০টি, সেখানে এবারের সংখ্যা তার চেয়ে প্রায় তিনগুণেরও বেশি।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে এ বছর মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।

বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে স্পিকার বলেন, “শিশুদের প্রয়োজনগুলো সবার সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শিশু সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে তাদের অন্তর্দৃষ্টিমূলক বিশ্লেষণ, সমাজ ও নীতিনির্ধারক উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। যার ফলে শিশু অধিকারগুলো নিশ্চিতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়।”

পুরস্কারবিজয়ী ও পুরস্কারের জন্য মনোনীত সাংবাদিকেরা যে গল্প তুলে ধরেছেন, তাতে শিশু ও তাদের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী নানা জরুরি বিষয় উঠে এসেছে। যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর পরিস্থিতি; পিরিয়ডকালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার ক্ষেত্রে কন্যাশিশুদের চ্যালেঞ্জসমূহ;পথশিশুদের অবস্থা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের গল্প।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, “প্রতিবেদন, ফটো ও ভিডিও সাংবাদিকদের যে কাজগুলো আমরা দেখলাম , সেগুলো শিশুদের জীবনে কেবল কী প্রয়োজন তাই তুলে ধরেনি, বরং তাদের জীবন আরও সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য কী কী করণীয় সেদিকেও আলোকপাত করেছে। আজকে, মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে বিজয়ীদের সম্মান জানানোর এই সুবর্ণক্ষণে, আমরা শিশুদের কথাগুলো শোনার, তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেওয়ার এবং তাদের অধিকারগুলোর নিশ্চিত করার আমাদের যে অঙ্গীকার রয়েছে তা পুনর্ব্যক্ত করছি ।”

নয় সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ বিচারক প্যানেল ১২টি ক্যাটেগরিতে (শ্রেণি) মনোনীত ৬৫ জনের মধ্য থেকে পুরস্কার বিজয়ীদের নির্বাচিত করেছেন। এই বিচারক প্যানেলে দেশের শীর্ষস্থানীয় সৃজনশীল লেখক, গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম) ব্যক্তিত্ব, ফটোগ্রাফার (আলোকচিত্রী) ও অধ্যাপকেরা রয়েছেন। পক্ষপাক্ষতহীন বিচার কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি আবেদনের ক্ষেত্রে নামের পরিবর্তে নিৰ্দিষ্ট কোড ব্যবহার করা হয়েছে।

এই বিচারক প্যানেলের একজন সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন বলেন, “মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস প্রতি বছর আমাদের শিশুদের অধিকার রক্ষার গুরু দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, সম্ভাবনাময় শিশু সাংবাদিকসহ আমাদের সাংবাদিক কমিউনিটি, বাংলাদেশে শিশুদের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে তাদের এই লেখা চালিয়ে যাবেন ।”

ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসের নামকরণ করা হয়েছে ‘‘মীনা’’ কার্টুন চরিত্রকে কেন্দ্র করে। ইউনিসেফের তৈরি ছোট মেয়ের এই কার্টুন চরিত্রটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিশু ও বড়দের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ‘‘মীনা’’ শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে এবং শিশুদের প্রতি বড়দের দায়িত্ব কী, তা তুলে ধরে। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এই কার্টুনটি সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম; ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ; বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম; শিক্ষাবিদ, ঔপন্যাসিক ও শিশুদের গল্প লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পাঠশালা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক শামীম আখতার। এছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল অ্যাম্বাসেডর বিদ্যা সিনহা মীম, ইউনিসেফের চাইল্ড অ্যাডভোকেটস এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩ বিজয়ীরা (১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব)

- আহমাদুল হাসান, প্রথম আলো, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গরিবই রয়ে গেল (প্রিন্ট সাংবাদিকতা- শিক্ষা ও শিশু)।

- মো. সাজিদ হোসেন, প্রথম আলো, আগুন কবলিত ভবন থেকে শিশুকে উদ্ধার (ফটো সাংবাদিকতা)।

- মো. বনি আমিন, যমুনা টেলিভিশন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে হরিলুট (ভিডিও সাংবাদিকতা)।

- মো. সবুজ মাহমুদ, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন, শিশু কেনা-বেচা, (ভিডিও সাংবাদিকতা)।

- মো. রাকিবুল হাসান তামিম, ঢাকা পোস্ট, ‘পিরিয়ড জটিলতা: পরিবর্তনের দূত হয়ে কিশোরীদের পাশে কিশোরীরা' (প্রিন্ট সাংবাদিকতা-পরিবর্তনের দূত শিশু)।

- মো. জসীম উদ্দীন, ঢাকা পোস্ট, নিরাপত্তার অজুহাত: বয়ঃসন্ধিই যেন ‘কাল’ রোহিঙ্গা কন্যাশিশুদের, (প্রিন্ট সাংবাদিকতা-রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু)।

- মুছা মল্লিক, ঢাকা পোস্ট, বিদ্যালয়ে অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার, নীরব মহামারিতে কিশোরীরা, (প্রিন্ট সাংবাদিকতা-ঝুঁকিতে শিশুরা)

- নজরুল ইসলাম, ঢাকা পোস্ট, করোনা-যুদ্ধ-আইনের ফাঁক : দিন দিন লম্বা হচ্ছে বাল্যবিবাহের মিছিল, (প্রিন্ট সাংবাদিকতা- জেন্ডার সমতা)।

-রবিউল আলম, ঢাকা নোট, “Manta and Erosion-Hit Children Grapple with Endless Identity Crisis, Thousands Drop Out” (প্রিন্ট সাংবাদিকতা- শিক্ষা ও শিশু)।

- সাধন কুমার সরকার, দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ, শিশুরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের বলি (প্রিন্ট সাংবাদিকতা- জলবায়ু পরিবর্তন ও শিশু)।

- শারমিন রিমা, সিভয়েস ২৪ ডটকম, কার দোষে ওরা ‘‘বড় অপরাধী’’?

- উদিসা ইসলাম, বাংলা ট্রিবিউন, কোথা থেকে আসে কোথায় হারায়, সে হিসাব নেই যে শিশুদের, (প্রিন্ট সাংবাদিকতা- শিশু অধিকার)।

ইউনিসেফ চিলড্রেনস মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২৩ বিজয়ীরা (১৮ বছরের নিচে)

- মো. সাফায়েত হোসেন শান্ত, দৈনিক আজকের সুন্দরবন, “Inspiration to Survive the Extreme” (আলোকচিত্র সাংবাদিকতা)

- মো. মুজাহিদ ইসলাম, এটিএন বাংলা, যশোরের যৌনপল্লীর ৫০ জন শিশু কিশোররা মায়ের পেশা ধরেই কি এই পেশাতে জড়িয়ে পড়বে, (ভিডিও সাংবাদিকতা)।

- মো. নাঈম ইসলাম, ইকোনোমিকনিউজ২৪ডটকম, “Transgender childhood is the name of a Terror” (প্রিন্ট সাংবাদিকতা)।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close