তরুণীর ফ্ল্যাট ভাড়া ১ লাখ টাকা, পাঠকের প্রতিক্রিয়া
রাজধানীর গুলশানে ফ্ল্যাট থেকে তরুণী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর সোমবার রাতে গুলশান থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ায় দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) আসামি করা হয়েছে।
২১ বছর বয়সী মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লা শহরে। তার পরিবার সেখানেই থাকে। গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে মুনিয়ার সম্পর্ক ছিল। তিনি ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন বলেও আমরা জানতে পেরেছি।
মামলার এজহারে জানা যায়, দুই বছর আগে মামলার আসামি ওই শিল্পপতির সঙ্গে পরিচয় হয় মোসারাত জাহান মুনিয়ার। চলতি বছরের মার্চ মাসে এক লাখ টাকা ভাড়ায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মুনিয়া। ১ মার্চ থেকে ওই শিল্পপতি মাঝে মাঝে ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন।
আরও পড়ুন : গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার
একজন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে কিভাবে ১ লাখ টাকা ভাড়ায় ফ্ল্যাটে থাকেন সে প্রশ্নটি এখন ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এজন্য কেউ তার পরিবারকে দায়ী করছেন, আবার শিল্পপতি ব্যবসায়ীদের সমালোচনা করছেন। ব্যবসায়ীরা তাদের টাকার দাপটে নিরীহ মেয়েদের বিপথে নিয়ে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে করা বেশ কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো-
সুচিন্ত জানান, ‘দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী এক শিল্পপতির আয়ত্তে লাখ টাকা দামের ফ্ল্যাটে থাকতেন, তাও পরিবার ছাড়া। তার মানে পরিবারও জানতো কার সাথে সম্পর্কিত ছিল। লাক্সারি লাইফে নয়, অল্পতে খুশি হওয়াতে রয়েছে প্রকৃত সুখ। 'লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু'। এই ঘটনা থেকে বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের ও অবিভাবকদের অনেক কিছু শেখার আছে। এই ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত রয়েছেন,তাদের শাস্তি হোক কঠোর’।
ফারুক নামে একজন লিখেছেন, ‘গুলশানে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে হলে আপনাকে মাসিক নূন্যতম লাখের উপরে টাকা উপার্জন করতে হবে। কলেজে ২য় বর্ষে পড়ুয়া শিক্ষার্থী নিশ্চয়ই লেখাপড়ার পাশাপাশি ঐ শিল্পপতির প্রতিষ্ঠানে ভালো চাকরি করতেন। তার এই সফলতা দেখে স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে হল। শিল্পপতিরা থাকুক সুখে, আগুন জ্বলুক গ্রাম থেকে ঢাকায় লেখাপড়া করতে আসা সুন্দরী মেয়েদের বুকে!
আরও পড়ুন : ‘৬ কোটি টাকার লেনদেন মামুনুলের ব্যাংক হিসাবে’
শিল্পী নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘এ কেমন পরিবার ! একটা অবিবাহিত মেয়ে একা একটা ফ্ল্যাটে কিভাবে ভাড়া নিয়ে থাকে ! পরিবারের দায়িত্বহীনতার কারণে আজ মেয়েটার এই পরিনীতি’!
আরেকজনের মন্তব্য হচ্ছে, ‘একা থাকার কারণে মানুষ সবকিছু করতে পারে।যার ফলাফল আত্মহত্যা। ২য় বর্ষের একটা মেধাবী মেয়ে এভাবে চলে যাওয়া সত্যি দুঃখজনক।পরিবারগুলোর আরও সচেতনতা বাড়ানো উচিত কারণ তাদের অনুপস্হিতিতে তার সন্তানেরা কেমন আছে ,কি করছে সেসব বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক ‘।
শফিক লিখেছেন, ‘বিয়ে করা বউ সন্তানদের পাশাপাশি ভার্সিটির সেরা সুন্দরী, উঠতি বয়সী মডেল কিংবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুন্দরীরা একজন শিল্পপতির মনোরঞ্জনে প্রতিনিধিত্ব করতেই পারে এবং তা স্বাভাবিক। কিন্তু কুমিল্লা থেকে এসে গুলশানের মতো জায়গা ফ্লাট বাড়ি ভাড়া করে মুক্তিযোদ্ধার কলেজ পড়ুয়া সুন্দরী মেয়ের একা থাকাটা পুরাই অস্বাভাবিক। শিল্পপতি যদি হত্যাকারী হয়, তরুণীর বাবা মা হবে হত্যাকারীর সহযোগী। লোভে পাপ, পাপে পল্টি’!
আশরাফের মন্তব্য হচ্ছে, ‘মেয়েটা একটা লোভী - প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে শিল্পপতির গৃহবধু বা ধনী পরিবারের সদস্য হওয়ার আশায় দীর্ঘদিন সম্পর্ক চালিয়ে গিয়েছিলো -- কিন্তু সে নিজে ও জানতো বয়স্ক এই লোকের বউ আছে এবং ফ্যামিলিগত ভাবে ও বিয়ে করা সম্ভব ও না - তারপরে ও শারীরীক সম্পর্ক করেছে , আর্থিক সুবিধা নিয়েছে , বড় বোন এবং আপন মা ও সব জেনে কিছু ই বলে নি ইন্টারপড়ুয়া মেয়ে কে দিয়ে টাকা পয়সা সম্পদ নেয়ার তালে ছিলো----নয়তো এতোদিন তারা তাদের বাড়ি ছাড়া মেয়েকে বাধা দিলো না কেন --অল্প বয়সে পেকে গেলে এমনই হয়’।
শিপলু লিখেছেন, ‘এদেশের অনেক বাবা-মা ই তার মেয়েকে দিয়ে চামড়ার ব্যবসা করাই!(গরু খাসি দুম্বার চামড়া ভাইবেন না আবার)!পরামর্শ দেয়;যাও মা; বড় দান মেরে আসো। ছোটখাটো কোন খ্যাপ মারবা না!!!! গুরুদয়ালের কী নীলাখেলা যে এমন দানই মারছে যে, সেই দানবীর মোহাসীনের নাম মনেমনে উচ্চারণ করতেও পারবে না!!!! লক্ষ্মী সোনা, আমার সাথে প্রেম করলে ফ্লাট না পাইলেও অন্ত্যত বিঁচার তো পাইতা। এখন তো আম ছালা আঠি চামড়া সবই গেল!!!!!! আসমানের মালিকের ছাড়া অন্য কোন বিঁচারব্যবস্তার পর আর তেমন আস্তা নেই !!!!’
লিজার মন্তব্য হচ্ছে, হাজার তরুন তরুণী গ্রাম-মফস্বল ছেড়ে শহরে আসে লেখাপড়া করতে। তার মানে এই না যে তারা সবাই অন্যের দাসী/রক্ষিতা হয়ে জীবনযাপন করে।। কিছু কিছু মেয়ে পারিবারিক কন্ট্রোল এর বাইরে গিয়ে, সঙ্গ দোষে খারাপ পথে পা বাড়ায়,লাক্সারিয়াস লাইফ লিড করতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়।। এর মানে সকল মেয়েই খারাপ নয়। তাহলে আপনার, আমার যত বোনেরা লেখাপড়া করতে শহরে এসেছে সবাই খারাপ - কিন্তু আপনি জানেন আপনার আমার বোন তেমনটা নয়।। যে ব্যক্তি ক্ষমতা আর টাকার জোরে একটা মেয়ে কে লাখ টাকার ভাড়া ফ্লাটে রাখতে পারে, না জানি সে এমনভাবে কত মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা করেছে।। আর সেই মেয়েকেই ৫০ লাখ টাকা চুরির দায়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে।। মেয়েটার চরিত্র তো খারাপ, কিন্তু সেই ক্ষমতাবান পুরুষটির চরিত্র কেমন!! তাকে কেন আইনের আওতায় আনা হচ্ছেনা? সকল মিডিয়া কেন তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক? জবাব চাই, বিচার চাই!!
জাকের বলেছেন, ‘ইসলামে এই জন্য ই পারিবারিক গাইডেন্সের বেপারে বলেছেন। নিজের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়ে কি করে কই যায় সেটার সঠিক তদারকি খুব জরুরী বাবা মায়ের জন্য। কলেজে পড়ে মেয়ে কেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ফ্ল্যাটে একা থাকতে হবে? সে এই টাকা পায় কই থেকে? কারা সঙ্গ দিচ্ছে? এই প্রশ্ন গুলো একজন বাবা মায়ের দরকার ছিল করার। মরার পরে মামলা না দিয়ে আগে থেকে সাবধান হলে এমন কিছু দেখতে হত না পরিবার কে’।
সুলতান লিখেছেন, ‘এটাকে বলে 'ইকোনমিক সাইন্স অব রিলেশনশীপ'। বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি একটা ইন্টার পড়ুয়া মেয়েকে টাকা পয়সার বৃত্তে ফেলে লালসা চরিতার্থ করছে। রক্ষিতা করে রাখছে। আপনি কি মনে করেন মেয়ের পরিবার জানে না? অবশ্যই জানে। এইচএসসিতে পড়া গ্রামের একটা মেয়ে ঢাকায় এক লাখ বিশ হাজার টাকা ভাড়া করা বাসায় থাকে। তাও পরিবার ছাড়া একাই। ইজ ইট পসিবল? টাকার পিছনে মেয়ে,পরিবার একত্রে ছুটেছে। সম্ভ্রম বিকিয়ে দিয়েছে। সেই মেয়ের পরিণতি যে এ ধরনের মৃত্যু সেটা স্বাভাবিকভাবেই অনুমেয়। হয়তো যা দুইদিন পরে ঘটার কথা ছিল তা দুইদিন আগেই ঘটে গেছে। দোষী হলে শুয়োরের বাচ্চার উপযুক্ত শাস্তি চাই। কিন্তু এ ধরনের মেয়ের জন্য কোনো সমবেদনা নেই। কারণ বাংলাদেশে বসবাস করে এরা ওয়েস্টার্ন কালচারের স্বাদ ভোগ করতে চায়’।