নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ জুলাই, ২০১৭

তাহসান-মিথিলার ডির্ভোস প্রসঙ্গ

বিচ্ছেদের নেপথ্য ও একমাত্র কন্যার ভবিষ্যত

জনপ্রিয় জুটি ও দম্পতি গায়ক ও অভিনেতা তাহসান এবং গায়িকা ও অভিনেত্রী মিথিলার দাম্পত্য জীবনের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে এই জুটি একটি যৌথ বিবৃতি দেন বৃহস্পতিবার ২০ জুলাই ২০১৭। তাদের রয়েছে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান, নাম- আইরা তেহরীম খান। প্রশ্ন হচ্ছে আইনানুগভাবে কে পাবে মেয়ের অধিকার? কার কাছে থাকবে আইরা? আইরা কি পারবে এই এই ডিভোর্সের বিপক্ষে দাঁড়াতে? কে দেবে ভরণপোষণ?

তারকা দম্পতি হিসেবে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন তাহসান-মিথিলা। কিন্তু সম্প্রতি তাদের বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিবাহ বিচ্ছেদ এখন টক অব দ্য টাউন। তাদের দেওয়া যৌথ বিবৃতির পর প্রশ্ন ওঠেছে- কেন এ বিচ্ছেদ? এর পেছনে কারণ হিসেবে মিথিলা পারস্পরিক বোঝাপড়া কমে যাওয়া ও দুজনের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা আলাদা হওয়াকে দায়ী করেছেন।

তবে মিথিলার পরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে, মূল ঘটনার সূত্রপাত বছর দুয়েক আগে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে মিথিলার গায়ে হাত তুলেন তাহসান। ঝগড়া শুরু হয়েছিল নারী ভক্তদের সঙ্গে তাহসানের মেলামেশা নিয়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটির দাবি, তাহসান কোন নারী ভক্তের সঙ্গে প্রেম বা অন্য কোন সম্পর্কে না জড়ালেও কেউ দেখা করতে চাইলে একা গিয়ে দেখা করতেন, তাদের সঙ্গে ঘুরতে যেতেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে নাটকের সেট থেকে নায়িকাদের নিয়ে লং ড্রাইভে যেতেন। এ নিয়ে মিথিলা আপত্তি তুললেও তাহসান পাত্তা দেননি। একটা সময় তা তাদের নিয়মিত ঝগড়ার বিষয়ে পরিণত হয়।

সর্বশেষ দুই বছর আগে গায়ে হাত তোলার পর থেকে মিথিলা ও তাহসান আলাদা থাকতে শুরু করেন। এ দুই বছরে সম্পর্কের তিক্ততা কমাতে দুজন বহুবার চেষ্টা করেছেন। দুই পরিবারের পক্ষ থেকে অসংখ্য আলাপ আলোচনা করেছেন। কিন্তু সম্পর্ক আর জোড়া লাগেনি।

তবে এ প্রসঙ্গে মিথিলা বলেন, ‘আমাদের বিবাহিত জীবন দীর্ঘ ১১ বছরের। ১৪ বছর ধরে একজন আরেকজনকে চিনি। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসলে হঠাৎ করে নিইনি। আমাদের বোঝাপড়ায় অনেক দিন ধরে সমস্যা হচ্ছিল। ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বও প্রকট ছিল। জীবন নিয়ে শুরুতে এক ধরনের পরিকল্পনা ছিল, সময়ের সঙ্গে তা বদলে গেছে। তারপরও এত বছরের সম্পর্ক তো আর এত সহজে কেউ ভেঙে ফেলতে চায় না। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।

কারণ, আমাদের একটি সন্তান আছে। দুই বছর ধরে আলাদা থাকলেও সন্তান আর সংসারের কথা ভেবে আমরা একসঙ্গে কাজ করে ভালো থাকার চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত আমরা বুঝতে পেরেছি, সম্পর্কটা আর টিকবে না।’

দুই বছর আলাদা থাকলেও দুইজনের বেশকিছু নাটকে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। তা মূলত পেশাদারিত্বের কারণে। এ সময় তাদের সম্পর্কে অবনতির বিষয়টি টের পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন একজন নাট্যনির্মাতা। তিনি বলেন, ‘আমরা যে বিষয়টি আগে থেকে টের পাইনি তা না। কিন্তু ভেবেছিলাম হয়ত তারা দুইজন আবার এক হয়ে যাবেন।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তাহসান ঘর ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মিথিলার সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘বেশ কয়েকমাস ধরে নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সামাজিক চাপে একটা সম্পর্ক ধরে রাখার চেয়ে আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই মঙ্গলজনক।’

তারা আরো বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি যে, এটা আপনাদের খুব খারাপ লাগবে। সেজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা সবসময় নিজেদের সম্পর্ক সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বজায় রেখেছিলাম, ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। আমরা আশা করি, আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।’

আরো জানান, একসঙ্গে সন্তানের দেখাশোনা করবেন তারা। এ পরিস্থিতিতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তাহসান-মিথিলা। ২০০৪ সালে তাহসান-মিথিলার প্রেম হয়। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট তারা বিয়ে করেন। তাদের রয়েছে কন্যা সন্তান আয়রা তাহরিম খান।

তাহসান-মিথিলার একমাত্র মেয়ে সন্তান বিষয়ে আইনজীবির বক্তব্য- যেহেতু তাহসান ও মিথিলার সন্তান হচ্ছে একটি কন্যা সন্তান, সেহেতু আইনানুগভাবে যতদিন না আইরা ঋতুস্রাব হওয়ার বয়সে পৌঁছাবে ততদিন পর্যন্ত আইরা মায়ের হেফাজতেই থাকবে, অবশ্য এর পরও মায়ের কাছে থাকা যাবে। কোন কারনে বিষয়টি যদি আদালতে গড়ায় তাহলে মেয়ে যদি বাবা বা মায়ের কাছে থাকতে চায়, তাহলে আদালত মেয়েরও মতামত নিতে পারে যদি মেয়ের মতামত দেয়ার মত সক্ষমতা থাকে। যদিও মেয়ের মতামত প্রদানের জন্য ১৮ বছর পূর্ণ হতে হয়, তবুও আদালত অনেক সময় ১৮ বছরের নিচের মেয়েরও মতামতের মূল্যায়ন করে এবং কার কাছে থাকলে মেয়ের ভালো হবে- সেই বিবেচনা করেই আদালত রায় প্রদান করবে। তবে মেয়ের অভিভাবকত্ব তথা ভরণপোষণের দায়িত্ব থাকবে বাবা তথা তাহসানের উপরেই। যতদিন না মেয়ে কর্মক্ষম কিংবা বিয়ে হয়ে যাবে, ততদিন এই ভরণপোষণ চালিয়ে যেতে হবে।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিচ্ছেদ,তাহসান-মিথিলা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist