অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেছেন, ‘বিগত জালিম সরকারের সময় যারা সিন্ডিকেট গঠন করেছিল, তারাই এখনো সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে। সিন্ডিকেট ভেঙে তছনছ করে দিন, জনগণকে স্বস্তি দিন। স্বস্থি দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করুন। ভালো কাজে এগিয়ে যান। জনগণের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সাধন করুন। জনগণের ৩৭ কোটি হাত আপনাদের সাহায্য করবে।’

আজ বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আপনারা ভুল করলে আমরা শুধরে দেব। আপনারা একগুয়েমি করলে আমরা প্রতিবাদ করব। আপনাদের একগুয়েমি করতে দেওয়া হবে না। অতীতের জালিমরা যা করেছে আমরা কেউ যেন তা না করি। মানুষের ওপর জুলুম করলে তার পরিণতি কি হয় কেবলই তা চোখের সামনে আমরা দেখে নিলাম। এখান থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। কেউ যদি একই পথে চলে তারও একই পরিনতি হবে কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’

তিনি বিগত সরকারের অত্যাচার কথা তুলে ধরে জামায়াতের আমীর বলেন, সবাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী দিনে জামায়াত রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে নারীদের সর্বোচ্চ সম্মানের সঙ্গে সমাজ উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হুসাইন ও আজিজুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. হারুন উর রশিদ, ড. মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, আব্দুল আলীম, আবু তালিব, ড. হাবিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মতিউর রহমান, মো. বাবুল হোসেন, মো. মতিয়ার রহমান, ওলিয়ার রহমান, মো. আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ, শহীদ ইবনুল পারভেজের বাবা মাস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবির সভাপতি এইচ এম আবু মুসা, শিবিরের ঝিনাইদহ শহর সভাপতি মেহেদী হাসান রাজুু, জেলা সভাপতি মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রধান অতিথি ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা একদিন গর্ব করে বলতেন, এই দেশ আমার বাপ-দাদার, এদেশ ছেড়ে আমরা কোথাও পালাব না, তারা কি জাতির সঙ্গে দেওয়া কথা রক্ষা করেছেন? তাদের কর্মীদের সঙ্গে দেওয়া কথা রক্ষা করেছেন? তারা কারো সঙ্গে দেওয়া কথা রক্ষা করতে পারেননি। এসব অপকর্মের ভয়ে এই দেশে দাঁড়িয়ে স্থির থাকার দুঃসাহস তাদের হয় নাই। আমরা তাদের বিচার চাই। তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। যে যেখানেই থাকুক, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তাদের উপযুক্ত পাওনাটা তাদেরকে দিয়ে দিতে হবে।’

দীর্ঘ দেড় যুগ ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের ওয়াজির আলী স্কুল অ্যাণ্ড কলেজ মাঠে জড়ো হয় নেতাকর্মীরা। পরে বিকাল ৩টার পর কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।