ইবি প্রতিনিধি

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ময়লা জমে ব্যবহারের অনুপযোগী শৌচাগার

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ভাঙা শৌচাগারের দরজা।-প্রতিদিনের সংবাদ

যত্রতত্র পড়ে আছে টিস্যু ও কাগজ। কাদাপানিতে মেঝে সয়লাব মেঝে। দরজাগুলো নড়বড়ে।এমনটি দেখা গেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় আইন বিভাগের শৌচাগারে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবন, ব্যবসায় প্রশাসন ভবন, ফলিত রসায়ন ভবন, টিএসসিসিসহ আবাসিক হলগুলোর অধিকাংশ শৌচাগার অপরিষ্কার থাকায় ব্যবহারের অনুপযুগী হয়ে পড়েছে। এ সব থেকে উৎপন্ন রোগজীবাণুতে সংক্রমিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

সরজমিনে দেখা গেছে, দিনের পর দিন পরিষ্কার না করায় শৌচাগারগুলোতে জরাজীর্ণ অবস্থা, ময়লা-দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। অধিকাংশ শৌচাগারের দরজায় ছিটকিনিও ভেঙে গেছে। ভাঙা বেসিন ও ভাঙা পানির টেপ গুলো থেকে অনবরত পানি পড়ায় শৌচাগারের মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি করুণ অবস্থায় রয়েছে টিএসসিসির শৌচাগারগুলো। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বিরাজ করছে। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সুয়ারেজ লাইন জ্যাম হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অহনা সুলতানা বলেন, আমাদের ওয়াশরুমের সমস্যা বহুদিনের। দুইবার ঠিক করালেও বেসিনের একটি ট্যাপ বাঁকা হয়ে থাকে। আয়নার নিচের তাক ভেঙ্গে পড়ে আছে বহুদিন ধরে। দরজা ভাঙ্গা, ছিটকিনি আটকানো যায় না। যা আমাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। একইসঙ্গে লাইট নষ্ট আছে।

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ বলেন, বর্তমানে আমাদের ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের, টিএসসিসির এবং হলগুলোর ওয়াশরুমের অবস্থা খুবই লজ্জাজনক। ওয়াশরুম গুলোর এমন অবস্থা যে ১০ হাত দূর থেকেই এত তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বারবার জানিয়েও সমাধান পাওয়া যায়নি।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী চাইন্দওয়াইন মারমা বলেন, অনেকে নোংরা শৌচাগারে যাওয়ার ভয়ে পানি কম পান করে। এতে শিক্ষার্থীদের মূত্রথলি, ইউরিন ইনফেকশন ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।

খালেদা জিয়া হলে গণরুমের শিক্ষার্থী কলি বলেন, আমাদের হলে দশটি গণরুমের শতাধিক ছাত্রীর জন্য ওয়াশরুম বরাদ্দ আছে মাত্র তিনটি। এমতাবস্থায়, বাথরুমে ছাত্রীদের লাইন লেগেই থাকে।

এদিকে শৌচাগারগুলোর শোচনীয় অবস্থার জন্য কম জনবলকেই দায়ী করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের প্রধান মো. সামছুল ইসলাম জোহা বলেন, বর্তমানে আমরা লোকবল সংকটে ভুগছি। ১৪-১৫ বছর আগে যাদের সুইপার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো তাদের অনেকেই মারা গেছেন। আবার অনেকে অবসরে গেছেন। বাকিদের দিয়ে আমরা কাজ কোনমতে চালিয়ে নিচ্ছি। আগে ৪০০ ওয়াশরুম থাকলেও এখন এর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার এর অধিক। কিন্তু সে অনুপাতে জনবল বাড়েনি। আর্থিক বরাদ্দের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ক্যাম্পাসে ওয়াশরুমের সংখ্যা বাড়লেও তা পরিষ্কারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ বাড়েনি। সরঞ্জামাদির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তবে খুব দ্রæতই সুইপার সংকটের সমাধান হবে বলে কর্তৃপক্ষের থেকে আশ্বাস পেয়েছি।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,শৌচাগার অপরিষ্কার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close